ফাইল চিত্র।
নিজের জেলায়, বাড়ির যথাসম্ভব কাছের স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়োগ বা বদলির ব্যবস্থা করাই রাজ্য সরকারের ঘোষিত নীতি। কিন্তু শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের (এসএসকে) পাঁচ শিক্ষিকার বদলি নিয়ে বিতর্ক এবং আইনি লড়াইয়ের মধ্যেই ফের ন’জন শিক্ষিকাকে বদলি করে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। শিক্ষক শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, অন্যান্য স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য যে-ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, এসএসকে শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে কি তা প্রযোজ্য নয়?
নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বহরমপুর মিউনিসিপ্যালিটির অধীন পাঁচ জন এসএসকে শিক্ষিকাকে বদলি করা হয়েছে দিনহাটা, ঝাড়গ্রাম, গঙ্গারামপুর, এগরা এবং মালে। আবার মেদিনীপুর মিউনিসিপ্যালিটির অধীন চার এসএসকে শিক্ষিকাকে বেলডাঙা, মুর্শিদাবাদ, বালুরঘাট এবং ধূপগুড়িতে বদলি করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবারেই দূরে বদলির প্রতিবাদে পাঁচ এসএসকে শিক্ষিকা বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর সময় বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ওই পাঁচ শিক্ষিকার মধ্যে তিন জন আরজি কর ও দু’জন এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা প্রথম দিকে কিছুটা খারাপ হয়ে পড়লেও এখন তাঁরা স্থিতিশীল বলে হাসপাতালের খবর।
এসএসকে শিক্ষিকাদের একাংশ বদলি রুখতে ইতিমধ্যে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছেন। বিক্ষোভ-বিষপান-বিতর্কের মধ্যে নতুন করে ন’জন এসএসকে শিক্ষিকার বদলিতে ফের অসন্তোষ দেখা
দিয়েছে এসএসকে শিক্ষিকা শিবিরে। তাঁদের প্রশ্ন, মাত্র ১০ হাজার টাকার বেতনে বাড়ি থেকে এত দূরে গিয়ে তাঁরা শিক্ষকতা করবেন কী ভাবে?
বিজেপির শিক্ষা সেলের রাজ্য আহ্বায়ক দীপল বিশ্বাস বলেন, “রাজ্য সরকার ও জাতীয় শিক্ষানীতির ঘোষিত নীতিই হল বাড়ির কাছাকাছি বদলি। অথচ আগের পাঁচ শিক্ষিকার মতো আরও ন’জন এসএসকে শিক্ষিকাকে একই পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যা রাজ্য সরকারের চরম ঔদ্ধত্যের প্রকাশ।”
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসু (ঘোষ) বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে বিষপানের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়া পাঁচ শিক্ষিকার সুস্থতা কামনা করেন। সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “এটা আন্দোলনের কোনও পথ হতে পারে না। স্থায়ীকরণের জন্য আন্দোলন চলছিল। সেখানে বদলির মতো একটা ব্যক্তিগত এজেন্ডা ঢুকিয়ে বিকাশ ভবনের সামনে বিষ খেয়ে আসলে সরকার ও শিক্ষা দফতরকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা। আত্মহনন বা আত্মহত্যার চেষ্টা কখনওই প্রতিবাদের পথ হতে পারে না।”