প্রতীকী ছবি।
মার্চের প্রথম বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধেই সরব হয়েছিলেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। তার জেরে ওই দুই স্তরে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন বা পুলিশি যাচাই এবং মেডিক্যাল টেস্ট বা স্বাস্থ্যপরীক্ষার ফর্ম অন্তত এই রাজ্যে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি খাস কলকাতাতেই কলেজে নবাগত শিক্ষকদের স্থায়ীকরণের সময় সেই ফর্ম পূরণের নির্দেশ দেওয়ায় এই নিয়ে ফের বিতর্ক বেধেছে।
পুলিশি যাচাই ও স্বাস্থ্যপরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি নিয়ে মার্চে শিক্ষকেরা আপত্তি তোলেন। স্বাস্থ্যপরীক্ষায় অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে জানতে চাওয়া হয়েছিল, প্রার্থীর ডিম্বাশয় ও জরায়ু স্বাভাবিক কি না। পুরুষদের হাইড্রোসিল-হার্নিয়া আছে কি না ইত্যাদি। সেই সঙ্গে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, ‘পার্সোনাল অ্যান্টিসিডেন্টস’ বা প্রার্থীর পূর্বপরিচয় খতিয়ে দেখবে পুলিশ। শিক্ষকপদের আবেদনকারী যদি আদতে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল বা অন্য কোনও দেশের বাসিন্দা হন, তা হলে সেই দেশে তাঁদের ঠিকানা কী ছিল, তার পাশাপাশি প্রার্থী কোন ধর্মাবলম্বী, জানতে চাওয়া হয়েছিল তা-ও। শিক্ষকদের বক্তব্য ছিল, এই ফর্মে যা রয়েছে, তা সিএএ, এনআরসি, এনপিআর চালু করারই পন্থা।
আপত্তি ওঠার পরেই সেই ফর্ম বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু শিক্ষা সূত্রের খবর, মধ্য কলকাতার একটি কলেজে নতুন শিক্ষকদের চাকরির স্থায়ীকরণের সময় ওই ফর্ম পূরণের কথা বলা হয়েছে। অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, স্বরাষ্ট্র দফতর নির্দেশ দিলেও করোনা পরিস্থিতিতে উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছ থেকে এই নিয়ে নতুন কোনও নির্দেশ তাঁরা পাননি। বেশির ভাগ কলেজ ওই সব যাচাই বা তথ্য ছাড়াই স্থায়ীকরণের কাজ সারছে। কিন্তু কোনও কোনও কলেজে ওই ফর্ম পূরণ করতে বলা হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বুধবার বলেন, “ফর্ম থেকে বিতর্কিত অংশ এবং অপ্রীতিকর প্রশ্ন বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। ফলে সেই অনুযায়ী কাজ করা উচিত প্রত্যেকের। কেউ যদি তা না-মানেন, সেটা নজরে এলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুটা) সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত বুধবার বলেন, ‘‘চরম অপমানকর এই নিয়মের বিরুদ্ধে আমরা আগেই প্রতিবাদ জানিয়েছি। আপত্তি কথা জানিয়েছিলাম শিক্ষামন্ত্রীকেও। আবার যদি সেই ফর্ম চালু করার চেষ্টা হয়, আমরা ফের প্রতিবাদ করব।’’