ফাইল চিত্র।
‘‘ঠিকাদারি না করলে খাব কী?’’ দলে ঠিকাদার-রাজ বন্ধ করতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছেন। শনিবার, হলদিয়ায় দলের শ্রমিক সংগঠনের সভামঞ্চ থেকে অভিষেক জানান, দলের পতাকা কাঁধে নিয়ে ঠিকাদারি করা চলবে না। রবিবার, তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধি ঠিকাদাররা তা নিয়ে, খেতে না পাওয়ার প্রশ্ন-ই তুলেছেন।
তাঁদের দাবি, তাঁরা সরকারকে কর দিয়ে আইন মেনে ঠিকাদারি ব্যবসা করেন। অভিষেকের বার্তাকে কেন্দ্র করে উত্তর দিনাজপুর জেলায় দলের ঠিকাদার নেতাদের ক্ষোভের কথা পৌঁছেছে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের কাছেও। কানাইয়ার বক্তব্য, “দল করতে হলে, সবাইকে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ মানতে হবে।”
অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলামও বলছেন, “আমাদের পরিবারের অনেকেই, আজ বলে নয়, দীর্ঘদিন ঠিকাদারির সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা রোজগার না করলে খাবে কী? তবে আমি ঠিকাদারি করি না, এটুকু বলতে পারি।”
রায়গঞ্জের মহারাজাহাট এলাকার বাসিন্দা উত্তম চট্টোপাধ্যায় (ছোটন) এলাকার ‘ওজনদার’ তৃণমূল নেতা। গত দু’দশক ধরে তিনি এলাকার প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার। তিনি বললেন, “ঠিকাদারি না করলে খাব কী? সংসারের খরচ কোথা থেকে আসবে? দল কি চাকরি দেবে?”
উত্তমের দাবি, তাঁর মতো জেলার ন’টি ব্লকের তৃণমূলের বহু নেতা ও জনপ্রতিনিধি বৈধ ভাবে ঠিকাদারি করে রোজগার করছেন। তাঁরা বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজনের জন্য নিয়মিত দলকে চাঁদাও দেন।
রায়গঞ্জের রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য মলয় সরকারও পেশায় ঠিকাদার। তাঁর দাবি, ঠিকাদাররা তো রাজ্য সরকারকে কর দিয়ে বৈধ ভাবে ঠিকাদারি করেন। তিনি প্রশ্ন তুললেন, তবে দলে থেকে তাঁদের ঠিকাদারি করতে সমস্যা কোথায়? মলয়ের বক্তব্য, “যাঁরা দল ও জনপ্রতিনিধির পদে থেকে ক্ষমতা ব্যবহার করে নামে ও বেনামে ঠিকাদারি কাজের বরাত নিচ্ছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে দলের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
পেশায় ঠিকাদার রায়গঞ্জ শহরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অভিজিৎ সাহার ব্যাখ্যা, “আসলে অভিষেকবাবু দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নিজেদের এলাকায় ঠিকাদারি না করার কথা বলতে চেয়েছেন।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।