কাঁথি থানার ঢোকার সময় সৌমেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
পথবাতি-দুর্নীতি মামলায় সৌমেন্দু অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল ১০ ঘণ্টারও বেশি। তলব পেয়ে সোমবার আবারও থানায় গিয়েছেন কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের নামে তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর ছেলেকে থানায় ‘স্রেফ বসিয়ে রাখা হয়েছে’ বলে অভিযোগ করছেন তাঁর আইনজীবী। ওই আইনজীবীর অভিযোগ, সোমবারও তাঁর মক্কেলকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ থানায় ঢুকলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি কোনও খাবার খাননি। তাঁর আরও দাবি, সৌমেন্দু থানায় যাওয়ার সময় দুটো গল্পের বই নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তা নিয়ে ঢুকতে বাধা দেয়। শেষে বইগুলো বাইরে রেখেই ভিতরে ঢুকতে হয়েছে তাঁকে।
সৌমেন্দুর ঘনিষ্ঠেরা জানিয়েছেন, সারদার একটি জমি সংক্রান্ত মামলায় সোমবার শুভেন্দু অধিকারীর ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সৌমেন্দু চেয়ারম্যান থাকাকালীন পুরসভার একটি জমি বিক্রি করা হয় সারদা সংস্থাকে। আবাসন তৈরির জন্য ওই জমি নিয়েছিল তারা। সেই সংক্রান্ত তথ্য জানতে সৌমেন্দুকে ডেকে পাঠানো হয়েছে থানায়।
সকালে থানায় গিয়েছেন। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সৌমেন্দু কিছু খাননি বলেই দাবি করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ জনেরা। তাঁদের দাবি, সারা দিন প্রায় না-খেয়েই রয়েছেন তিনি। বাড়ির খাবার নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি থানায়। এ প্রসঙ্গে অনির্বাণ বলেন, ‘‘আমি আমার মক্কেলের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাইনি। কাঁথি থানার তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে দেখা করেছি। সৌমেন্দু কী খাবার খেয়েছেন তা নিয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে জানলাম যে, তিনি অনাহারে রয়েছেন!’’ কারণ হিসাবে অনির্বাণ বলেন, ‘‘কাঁথি থানা হোটেল থেকে খাবারের ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু সেই খাবারের বিষয়ে আপত্তি জানান সৌমেন্দুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয়বাহিনী। তাঁর বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তাতে আপত্তি জানান তদন্তকারী অফিসার। এই টালবাহানার মধ্যে আমার মক্কেল অনাহারে রয়েছেন। তিনি সকাল থেকে শুধুমাত্র চা-বিস্কুট খেয়েছেন।’’
এর আগে শুক্রবার কাঁথি থানা থেকে বেরিয়ে সৌমেন্দু বলেছিলেন, তাঁকে স্রেফ বসিয়ে রাখা হয়েছিল থানায়। সোমবারও তাঁকে অনেকটা সময় বসে থাকতে হবে এটা যেন অনুমান করে তিনি বই নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন অনির্বাণ। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দিন তদন্তের নাম করে এমনি এমনি বসে থাকতে হচ্ছে। এই কারণে বাড়ি থেকে দু’টি গল্পের বই নিয়ে এসেছিলেন সৌমেন্দু। সেই গল্পের বই নিয়ে থানায় ঢোকার অনুমতি পাননি তিনি।’’
অনির্বাণের অভিযোগ, ‘‘তদন্তের নামে আমার মক্কেলকে হেনস্থা করা হচ্ছে।’’ যদিও এ নিয়ে পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।