অধীর চৌধুরী, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও সূর্যকান্ত মিশ্র ফাইল চিত্র।
সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে এ বার আলিমুদ্দিনকে চিঠি দিল বিধান ভবন। বিকাশের বক্তব্য নিয়ে সিপিএমের কী অবস্থান, তা স্পষ্ট করার আবেদন করা হয়েছে চিঠিতে।
প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বিকাশ সম্প্রতি নেট মাধ্যমে কংগ্রেস সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তাতে কংগ্রেসের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এই সব মন্তব্যে আমরা অপমানিত বোধ করেছি। আমরা জানতে চাইছি এই মন্তব্য সম্পর্কে সিপিএমের অবস্থান কী। সিপিএমও কি এই মন্তব্য সমর্থ করে? দ্রুত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুন তাঁরা।’
শনিবার সকালে একটি পোস্টে একাধিকবার সাঁইবাড়ির কথা উল্লেখ করে ‘কংগ্রেসি গুণ্ডা’ শব্দটি ব্যবহার করেন বিকাশ। সঙ্গে কংগ্রেসি গুন্ডাদের হাতে সিপিএম নেতা-কর্মীদের হত্যার কথা ফলাও করে লেখেন তিনি। পোস্টের শেষে সেই হত্যাকাণ্ডের স্মরণে আগামী ১২ জুন বর্ধমানের আহ্লাদিপুরের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দলীয় কর্মীদের আসতে বলেন। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটে জোট করেই লড়াই করেছে কংগ্রেস-সিপিএম। এই পরিস্থিতিতে বিকাশের পোস্ট অস্বস্তি বাড়িয়েছে জোটের অভ্যন্তরে।
কর্মীদের কাছে বিকাশের এই পোস্টের কথা জানতে পেরে সূর্যকান্তকে ফোন করেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। ক্ষোভের সুরে কংগ্রেস নেতা প্রদীপ বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি না পঞ্চাশ বছর আগেকার ঘটনা এই মুহূর্তে আলোচনা করার কোনও অবকাশ রয়েছে। গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। আর যদি এটাই মাথায় থাকে তাহলে আমরা জোট করতে গেলাম কেন? অতীতের অনেক বিষাক্ত স্মৃতি তো সকলেরই আছে। সেসব ভুলেই তো নতুন বাংলা গড়ব বলে জোট করেছিলাম।’’
বিকাশের এমন পোস্টের ফলে রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বও চাপে পড়ে গিয়েছেন বলে খবর। সেই অস্বস্তি ঝেড়ে ফেলতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, ‘‘সোশাল মিডিয়ায় কে কী পোস্ট করেছেন জানি না। আমরা এখন এই মুহূর্তে বিতর্কে ঢুকতে চাই না। এখন বিতর্কের সময় নয়।’’
সমালেচনার মুখে সাফাইয়ের সুরে বিকাশ বলেছেন, ‘‘অতীতকে অস্বীকার করে কোনও লাভ নেই, অতীতটা সত্যই। এতে মতবিরোধের কোনও জায়গা নেই। কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভায় গিয়েছি এটা সত্যি। তেমনি সাঁইবাড়ি নিয়ে বামপন্থীদের যে মত তা উল্লেখ করেছি। যদি কংগ্রেসের কেউ আমার পোস্ট নিয়ে দুঃখ পেয়ে থাকেন, তা হলে আমি দুঃখিত। তবে আমার মনে হয়, এমন একটি ঘটনার জন্য বাম-কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়বে না।’’
যদিও বিষয়টিকে কংগ্রেস যে মোটেই হাল্কা ভাবে নিচ্ছে না, তা এই চিঠি থেকেই পরিষ্কার। এখন দেখার চিঠির জবাবে আলিমুদ্দিনের তরফে কী বলা হয়।