ছবি: সংগৃহীত।
এলাকা ধরে ধরে দলের সংগঠন ও জনসমর্থনের ‘পকেট’ বুঝেই এ বার বামেদের কাছে আসন দাবি করবে কংগ্রেস। এই তালিকায় পড়তে চলেছে তিন জেলা মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরের অধিকাংশ আসন। প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, শতাধিক কেন্দ্রের দাবি নিয়েই বামেদের সঙ্গে আসন-রফার আলোচনা শুরু করতে চলেছে প্রদেশ কংগ্রেস।
বামফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে আজ, রবিবার সকালে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে বৈঠকে বসবেন এআইসিসি-র গড়ে দেওয়া কমিটির চার সদস্য। তার আগে শনিবার সন্ধ্যায় বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেসের বাছাই করা নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। দলীয় সূত্রের খবর, কংগ্রেসের জেলা সভাপতিরা নিজেদের এলাকা থেকে যে আসনের দাবি পেশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের কাছে, তা যোগ করলে সংখ্যাটা ১৫২-১৫৩ হয়ে যাচ্ছে! কিন্তু এত আসনের দাবি জানানো যে বাস্তবসম্মত নয়, তা বুঝতে পারছেন প্রদেশ নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা চাইব, দু’পক্ষের জন্য সম্মানজনক শর্তেই আসন-রফা হোক। তিন-চারটি জেলায় কংগ্রেস শক্তিশালী। তার বাইরে আরও কিছু পকেট আছে, যেখানে আমরা প্রার্থী দিতে চাইব। বাম নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই সংখ্যার হিসেব চূড়ান্ত হবে।’’ কংগ্রেস নেতারা ঠিক করেছেন, প্রদেশ সভাপতির উপস্থিতিতে আজ পূর্ণাঙ্গ বৈঠকের পরে দু’পক্ষের জনাদুয়েক নেতার ছোট ‘টিম’ ঘরোয়া আলোচনা চালিয়ে আসন-রফার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
বামেদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে এবং ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ করে— এই দু’রকম মিলিয়ে ২০১৬ সালে ৪৪টি আসন জিতেছিল কংগ্রেস। গত বার যে পক্ষ যে আসন জিতেছিল, এ বার তারাই সেখানে প্রার্থী দেবে, এটাই হতে চলেছে আসন-রফার প্রাথমিক শর্ত। এই হিসেবেই মুর্শিদাবাদ ও মালদহের অধিকাংশ আসন কংগ্রেসের পাওয়ার কথা। বিধান ভবনের বৈঠকে এ দিন মালদহের আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী বলেন, একা লড়েও তাঁরা জেলার ১২টি আসনে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে জোটের স্বার্থে গোটাদুয়েক আসন বামেদের ছাড়া যেতে পারে। আবার পুরুলিয়ার নেপাল মাহাতো দাবি করেন, বামেদের সহায়তা দরকার নেই। তাঁরা একক ভাবেই জেলার ৯টি আসনে জিততে পারবেন! কংগ্রেসের বাকি নেতারা অবশ্য এমন দাবির সঙ্গে বাস্তবের মিল খুঁজে পাচ্ছেন না।
এআইসিসি-র কমিটি মেনে নেপালবাবুকে সঙ্গে নিয়েই আজ অধীরবাবু, আব্দুল মান্নান ও প্রদীপ ভট্টাচার্য জোট-বৈঠকে যাবেন। বামেদের তরফে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গে তিন শরিক দলের নেতারাও বৈঠকে থাকবেন।