কংগ্রেস হাইকমান্ডের উদ্যোগে জোটের জট কি কাটবে।
আব্বাসের দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোট চূড়ান্ত করতে শেষমেশ আসরে নামল এআইসিসি। এ বিষয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী খোঁজখবর করেছেন বলে সূত্রের খবর। টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের কথাবার্তার পর এআইসিসি বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জোট প্রক্রিয়া গতি না পাওয়ায়মঙ্গলবার দুপুরে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আইএসএফ নেতাআব্বাস সিদ্দিকি। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘প্রয়োজনে একাই লড়ব বিধানসভা ভোটে।’’ বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের গড়িমসির কারণে জোট প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হয়েছে ইঙ্গিত দিয়ে আব্বাস তাঁর ক্ষোভ গোপন করেননি।
যদিও, সোমবার রাতেই জোট প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ফোন করেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। জানতে চান, জোটের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে। প্রদীপবাবু দলনেত্রীকে জোটের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অবগত করেন। সূত্রের খবর, সনিয়া জোটের বর্তমান পরিস্থিতি জানার পরেইএআইসিসি নেতৃত্বএবিষয়ে উদ্যোগী হয়। জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের জোটের বিষয়ে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপালকে হস্তক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। বর্তমানে এআইসিসি নেতা জিতিন প্রসাদ বাংলার সংগঠনের দায়িত্বে। সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও জিতিনের সঙ্গে কথা বলেই জোটের বিষয়ে পদক্ষেপ করতে পারেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বহু আগেইএআইসিসি ও সিপিএম কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব উভয়ই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে জোট গঠনের বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই জোটে আব্বাসের দল আইএসএফ ঢুকে পড়ায় আসন বন্টন নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। বাম ও কংগ্রেস দুই শিবিরকেই তাঁদের ভাগ থেকে আব্বাসের দলকে আসন ছাড়তে হচ্ছে। বামফ্রন্টের বড় শরিক হিসেবে সিপিএমআইএসএফের সঙ্গে আসন বন্টন চূড়ান্ত করে ফেললেও, কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়টি এখনও ঝুলে রয়েছে। এক্ষেত্রে অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানিয়েছেন, আব্বাসের দল এমন অনেক আসনের দাবি জানিয়েছে যেখানে বর্তমানে কংগ্রেসের বিধায়ক রয়েছেন। ওই নেতার দাবি, আইএসএফের তালিকায় রয়েছে বাদুড়িয়া, হাঁসন, আমতা, বহরমপুরের মতো বিধানসভা কেন্দ্রগুলি।
আব্বাসের দলের এমন দাবি দেখেই বেজায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তাই বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে আসন রফা নিয়ে মোটামুটি একমত হওয়া গেলেও, কংগ্রেস এখনও আইএসএফের দাবি মানেনি। সূত্রের খবর, বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপবাবুর থেকে এই পরিস্থিতির কথাই শুনেছেন সনিয়া। আর এই ফোনালাপের পরেই জোট প্রক্রিয়া মসৃণ করতে উদ্যোগী হয়েছে এআইসিসি। কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে প্রদীপ বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোট ও জোট দুটি বিষয় নিয়েই সনিয়াজির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু সেসব কথা প্রকাশ্যে বলা যায় না। যতটুকু বলা সম্ভব, ততটুকুই বলব।’’