বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘সবুজ সাথী’ নিয়ে এ বার দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির জনসভায়মঙ্গলবার শুভেন্দু দাবি করেন, ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পে বিলি করা সাইকেলের বরাত দেওয়া হয়েছিল ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ ততা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকার পরিবারকে। শুভেন্দুর এই নয়া অভিযোগ নিয়ে পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূলও। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের তোপ, ‘একতরফা ভাবে কুৎসা’ করছেন শুভেন্দু।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি। মঙ্গলবার কুলতলিতে জোড়াফুলের গড়ে পা রেখে ফের অভিষেককে নিশানা করলেন শুভেন্দু। ঘটনাচক্রে অভিষেকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী রুজিরার সঙ্গে প্রায় সওয়া ১ ঘণ্টা কথা বলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই)-র আধিকারিকরা। তাঁরা কয়লা-কাণ্ডে ব্যাঙ্ককের একটি ব্যাঙ্কে রুজিরার অ্যাকাউন্ট থেকে ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন নিয়ে অভিষেক-জায়ার বক্তব্য শোনেন। সেই ঘটনাক্রমকে টেনে এনে শ্লেষের সুরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আজ দুয়ারে সরকার নয়, দুয়ারে সিবিআই। সিবিআই নোটিস না দিতে গেলে ওই ১০০ কোটি টাকা দামের প্রাসাদ রাজ্যবাসী দেখতে পেতেন না। আর সিবিআই যাওয়ার আগে উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বলতে গিয়েছিলেন, বউমা, তুমি আমার কীর্তিমান ভাইপোর নামটা বলবে না।’’ এর পর অভিষেকের শ্যালিকার প্রসঙ্গ টেনে ওই বিজেপি নেতার অভিযোগ, ‘‘মেনকা গম্ভীরের স্বামী অঙ্কুশ অরোরা। অঙ্কুশ অরোরার বাবা পবন অরোরা। সবুজ সাথীর সাইকেল এরা সরবরাহ করে। এই সাইকেল সারিয়ে তবে চালাতে হয়।’’
সম্প্রতি বারুইপুরের একটি সভায় নথি দেখিয়ে আকারে ইঙ্গিতে শুভেন্দু অভিযোগ করেন অভিষেকের বিরুদ্ধে। তাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককের কাশিকর্ন ব্রাঞ্চে টাকা জমা পড়ার কথা কুলতলিতেও টেনে এনেছেন তিনি।
শুভেন্দুর অভিযোগ নিয়ে পাল্টা ময়দানে নেমেছে তৃণমূলও। কুণালের বক্তব্য, ‘‘শুভেন্দু যা বলেছেন তা মিথ্যা। তিনি কুৎসা করছেন। শুভেন্দুর শয়নে স্বপনে অভিষেক। তাই তাঁর সম্পর্কে রোজ খারাপ কথা বলছেন। তিনি নিজে সিবিআইয়ের ভয়ে দলবদল করেছেন। এ বার বিজেপি-র মঞ্চে গিয়ে তিনি গোয়েবলসীয় কায়দায় কুৎসা করছেন। চরিত্রহনন করছেন। উন্নয়নের রাজনীতির কাছে পরাস্ত হয়েই এমন করছেন উনি।’’
বিজেপি-তে যোগদানের পর থেকেই অভিষেককে ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ করে চলেছেন শুভেন্দু। সেই একই রণকৌশল অভিষেকেরও। মঙ্গলবার অভিষেকের স্ত্রী-র সঙ্গে কথা বলেছে সিবিআই। নোটিস দেওয়া হয়েছে রুজিরার বোন মেনকাকেও। এই আবহে শুভেন্দুর ‘কৌশলী মন্তব্য’ বিষয়টিতে নতুন মাত্রা যোগ করল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। পাশাপাশি, প্রাক্তন সতীর্থকে শুভেন্দু কী জবাব অভিষেক দেন তা নিয়েও আগ্রহ তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।