চলতি বছরে রাজ্যের যে-সতেরোটি পুরসভায় বোর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, তার মধ্যে আছে হাওড়াও। কিন্তু ওই পুরসভায় নির্বাচনের ব্যাপারে রাজ্য সরকার বেবাক চুপ। তাই হাওড়ার বিষয়টি বিশেষ ভাবে উল্লেখ করে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সরকার এখনও পর্যন্ত তার কোনও জবাব রাজ্যকে দেয়নি বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
ওই ১৭টি পুরসভার মধ্যে ১৪টির ভোট সংক্রান্ত বিষয়ে কিয়দংশে সাড়া দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু হাওড়া নিয়ে তারা কিছু জানায়নি। সেখানের ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস হবে, নাকি পুরনো ওয়ার্ডের সংখ্যা বজায় থাকবে অথবা কোথাও নতুন এলাকা জুড়বে— এই সব বিষয়ে সরকারের তরফে কিছুই স্পষ্ট করা হয়নি। তাই সেখানে ভোটের ব্যাপারে এগোতে পারছে না কমিশন। কারণ, এই সব প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট না-হলে কমিশনের তরফে পরবর্তী পদক্ষেপ করা সম্ভব নয় বলে মত সংশ্লিষ্ট শিবিরের। তাদের ব্যাখ্যা, ওয়ার্ড-সংখ্যা স্পষ্ট হলে সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে হাওড়ায় পুরভোট হয়েছিল।
শাসক দল সূত্রের খবর, হাওড়া পুরসভায় ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস নিয়ে দলের অন্দরে ঐকমত্যের অভাব আছে। এ বিষয়ে জেলা দলের একটি অংশ রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন। তা জানতে পেরে দলের অন্য অংশ এ নিয়ে ‘সক্রিয়’ হয়ে ওঠে। রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তদ্বির-তদারকি শুরু করে তারা। এই মতানৈক্যের জেরে পুরো বিষয়টি থমকে গিয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, হাওড়ায় কিছু কিছু ওয়ার্ডে প্রভাব রয়েছে বিরোধীদের। পুরসভার ভোটে কয়েকটি ওয়ার্ড বিরোধীরা দখল করলে লোকসভা নির্বাচনে তার ছাপ পড়তে পারে। সেই জন্য হাওড়ার বিষয়ে আপাতত নীরব থাকার রাস্তা নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই বিষয়ে শাসক দলের নেতারা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। ‘‘ওখানে এখনই নির্বাচনের সম্ভাবনা কার্যত নেই,’’ বলেন দলের এক নেতা।
কমিশন সূত্রের বক্তব্য, রাজ্য যদি হঠাৎ ভোটের কথা বলে, অসুবিধায় পড়তে হবে কমিশনকেই। তাই রাজ্যকে জানিয়ে রাখা হচ্ছে। এর পাশাপাশি সরকার বালুরঘাট ও কৃষ্ণনগরে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের কথা জানালেও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। তাই ওই দু’টি পুরসভার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছে কমিশন। কাল, মঙ্গলবার ১৪টি পুরসভার ওয়ার্ড সংরক্ষণের খসড়া প্রকাশ করার কথা। ২৫ সেপ্টেম্বর তার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওয়ার্ড সংরক্ষণের খসড়া প্রকাশের ১০ সপ্তাহের আগে কিন্তু কোনও ভোট করা যায় না।