উপহারের ব্যাগ হাতে কাঁথির জেলা কার্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
পুজোর উপহারেও পদ্মে বিঁধছে দ্বন্দ্ব-কাঁটা। তা-ও আবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এলাকা কাঁথিতে।
শারোদৎসবের প্রাক্কালে বিজেপির কর্মকর্তাদের জন্য ‘পুজোর উপহার’ পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিশু এবং নারী সুরক্ষা মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে কাঁথি লোকসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্মৃতি। সেই মতো সেখানকার নেতাদের জন্যই এসেছে তাঁর উপহার। কাঁথিতে বিজেপির জেলা কার্যালয় থেকে দলের পদাধিকারীদের হাতে সেই উপহারের ব্যাগ তুলে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক নরেশ শর্মা ও বিজেপি নেতা মনোজ পাণ্ডে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সূত্রের খবর, নতুন পোশাক, মিষ্টির প্যাকেট এবং শুভেচ্ছা বার্তা-সহ সেই উপহারের ব্যাগ মোট ১১১ জন পেয়েছেন। তার পরেই বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির বর্তমান পদাধিকারীদের মধ্যে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ লোকজনই বেশি। এঁদের বেশির ভাগই দলবদলু, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছেন। মূলত তাঁরাই এই উপহার পেয়েছেন বলে দাবি দলের একাংশের।
কাঁথি ও ভগবানপুরে বিজেপির একাধিক পুরনো কর্মকর্তার আক্ষেপ, “বছরের পর বছর তৃণমূলের সঙ্গে লড়ে সংগঠন টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। আর এখন সেই তৃণমূল থেকে আসা লোকজনই সব। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপহারেও আমরা ব্রাত্যই থেকে গেলাম।” তৃণমূলের জেলা সভাধিপতি উত্তম বারিকের কটাক্ষ, “শুভেন্দু অধিকারী আর তাঁর ঘনিষ্ঠেরাই এখন বঙ্গ বিজেপির নিয়ন্ত্রক। পুরনো কর্মীদের সবেতেই দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে।”
২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে এ রাজ্য থেকে না-জেতা আসনে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি। কাঁথি তার অন্যতম। সেখানে দায়িত্বে এখন স্মৃতি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েক বার তিনি কাঁথিতে এসে সাংগঠনিক বৈঠক, জনসংযোগ কর্মসূচি সেরেছেন। এ বার পাঠিয়েছেন দুর্গাপুজোর উপহার।
বিজেপি সূত্রের খবর, কাঁথি সংগঠনিক জেলা বিজেপির পদাধিকারীদের পাশাপাশি মণ্ডল সভাপতি, সাতটি মোর্চার জেলা সভাপতি, লোকসভার কোর কমিটির সদস্যদের হাতেও উঠেছে স্মৃতির পাঠানো উপহার। কিন্তু আদি বিজেপি বলে পরিচিত এবং নিচুতলার কর্মীরা ব্রাত্যই থেকেছেন বলে দাবি।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী কিছু বলতে চাননি। তবে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি তথা বিধায়ক অরূপ দাস বলেছেন, “ব্যক্তিগত ভাবে পুজোর এই উপহার পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বিভিন্ন পদাধিকারী উপহার পেয়েছেন। আগামী দিনে বাকি কর্মকর্তাদেরও পুজোর উপহার দেওয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত শীর্ষ নেতৃত্বই নেবেন।”