গহর সুস্থ হচ্ছে স্বস্তিতে সুজালি

গুলি কেবল বুক ছুঁয়ে চলে গিয়েছে শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে ইসলামপুরের সুজালির মানুষ। কিন্তু সেই সঙ্গেই তাঁরা জানিয়েছেন, এলাকায় এখনও আতঙ্ক কাটেনি। হামলা ও লুটপাটের ফলে আতঙ্কের ছাপ রয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৬ ০২:২৪
Share:

গুলি কেবল বুক ছুঁয়ে চলে গিয়েছে শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে ইসলামপুরের সুজালির মানুষ। কিন্তু সেই সঙ্গেই তাঁরা জানিয়েছেন, এলাকায় এখনও আতঙ্ক কাটেনি। হামলা ও লুটপাটের ফলে আতঙ্কের ছাপ রয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। এদিনও সুজালি রাধারগছ এলাকাতে পুলিশি টহলদারি ছিল। বাড়ির ছেলের চিন্তায় রাতে প্রায় জেগেই কাটিয়েছেন পরিবারের লোকেরা। শিলিগুড়িতে যাঁরা গহরের সঙ্গে এসেছিলেন তাদের নার্সিংহোমেই কোনও রকমে রাত কাটাতে হচ্ছে।

Advertisement

গহর আলির আরেক কাকা পজির মহম্মদের কথায়, ‘‘নির্বাচনে জয়ী যে দলই হউক না কেন এলাকাতে গণ্ডগোল লেগেই থাকে। কথায় কথায় চলে গুলি বোমাবাজি, লুটতরাজ। নির্বাচনের পর এলাকার ওই পরিবেশ আমরা কোন দিনও চাইনি।’’ পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, রবিবার দুপুরে গরুর জন্য ঘাস কেটে বাড়ি ফিরছিল গহর। বিজয় মিছিলে বাজনার আওয়াজ পেয়ে ছুটে গিয়েছিল ও। সেখানেই গুলির আওয়াজে যখন মিছিলের সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। গুরুতর জখম অবস্থায় শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।

কিন্তু টাকার অভাবে সেখান থেকে গহরকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে। তবে নার্সিংহোমে রঞ্জন পাল চৌধুরী নামে যে চিকিৎসকের অধীনে তার চিকিৎসা চলছিল তিনি বলেছেন, ‘‘ওই ছাত্রের জখম স্থানের চিকিৎসা করা হচ্ছে। ছাত্রটি ভাল রয়েছে।’’ সোমবার খালেক বলে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তাঁকে তিন দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের দাবি, ‘‘জখম ছাত্রের পরিবারের তরফে ধৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে।’’

Advertisement

গত রবিবারের ঘটনার পেছনে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়াও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তৃণমূলের জেলা নেতাদের একাংশ। এ বিষয়ে দলের নেতারার স্বাভাবিক ভাবেই কোনও মন্তব্য না করেলও, বিরোধীরা সরব হয়েছেন।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালের কথায়, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই দিন হামিদুরবাবুর বিজয় মিছিলে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বলে আমাদের সন্দেহ। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওইদিন ওই ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পুলিশ এখন তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের আড়াল করতে চাইছে।’’ জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দের দাবি, ‘‘পুলিশ এক সিপিএম সমর্থককে গ্রেফতার করলেও এখনও পর্যন্ত কোনও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। পুলিশ নিশ্চয়ই কিছু আড়াল করতে চাইছে।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেস ও সিপিএমের দুষ্কৃতীরা পরিকল্পিত ভাবে বিজয় মিছিলে যোগদানকারী তৃণমূলের কোনও নেতা বা কর্মীকে গুলি করে খুনের জন্য হামলা চালিয়েছিল। এখন ভয় পেয়ে কংগ্রেস ও সিপিএম গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ করছে।’’ বিধায়ক হামিদুরবাবুর দাবি, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ তুলে অপপ্রচার শুরু করেছে বিরোধীরা।’’ সাহিনবাবু দাবি করেছেন, তিনি তৃণমূলেই রয়েছেন। দীর্ঘদিন আগেই দলের রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে দলে ফিরিয়ে নিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ‘‘ছাত্রের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পিছনে তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement