প্রতীকী ছবি।
তদন্ত নিয়ে টানাপড়েন আগেই ছিল। এ বার মামলা হস্তান্তর নিয়ে সিআইডি ও জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র লড়াই পৌঁছল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই লড়াইয়ে কে জিতবে তা এখনও বলা মুশকিল। তবে প্রাথমিক ভাবে মামলার নথি হস্তান্তর করার নির্দেশে স্থগিতাদেশ আদায় করেছে রাজ্য। কলকাতার নগর দায়রা আদালত সিআইডি বীরভূমের একটি বিস্ফোরণ মামলার নথি এনআইএ-র হাতে তুলে দিতে বলেছিল। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী কলকাতার নগর দায়রা বিচারককে বলেছেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও নির্দেশ না-দিতে।
সিবিআই তদন্ত নিয়ে রাজ্যের আপত্তি ছিলই। গত কয়েক মাসে রাজ্যে সক্রিয় হয়েছে এনআইএ-ও। জঙ্গি ধরপাকড়ের পাশাপাশি বাম আমলের নাশকতা ও খুনের মামলায় একদা জনগণের কমিটি ও অধুনা তৃণমূল নেতা ছত্রধর মাহাতো-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এর পাশাপাশি আরও কিছু ঘটনা নিয়ে সক্রিয় হয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তার মধ্যে একটি গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের গাংপুরে বাবলু মণ্ডল নামে এক জনের বাড়িতে বিস্ফোরণের জেরে ঘরের চাল উড়ে গিয়েছিল। কেউ হতাহত হননি। ওই ঘটনার তদন্তভার এনআইএ নিয়েছে। তাই কলকাতার নগর দায়রা আদালত এডিজি (সিআইডি)-কে মামলার নথি হস্তান্তর করতে বলেছিল। তার পরেই রাজ্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।
মামলায় রাজ্যের কৌঁসুলিদের গতিপ্রকৃতি দেখে অনেকেই মনে করছেন, কোনও মতে স্থগিতাদেশ নিয়ে নথি হস্তান্তর রুখে দেওয়াই রাজ্যের কৌশল। তাই স্থগিতাদেশের পরে নিম্ন আদালত যাতে এডিজি (সিআইডি)-কে নির্দেশ পালন না-করা নিয়ে কোনও কড়া ব্যবস্থা না-নেয় তাও আর্জি জানান সরকারি কৌঁসুলি। তাও মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট।
প্রশ্ন উঠেছে, এনআইএ তদন্তে রাজ্যের আপত্তি কেন? অনেকেই বলছেন, বিভিন্ন ঘটনায় রাজ্যের শাসক দলের নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে। ভোটের আগে এই তথ্য কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির হাতে গেলে রাজনৈতিক ক্ষতি হতে পারে। অবশ্য পাল্টা যুক্তিও রয়েছে। প্রশাসনের একাংশ বলছে, কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে ইচ্ছামতো তদন্ত করাতে চায় বিজেপি। তা ছাড়া ওই ঘটনায় সিআইডি তদন্ত এগিয়ে গিয়েছে।