বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
তৃণমূল জমানায় পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা কাশ্মীরের চেয়েও খারাপ বলে অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্য বিজেপি ৯ থেকে ১৬ অগস্ট ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও’ কর্মসূচি নিয়েছে। তারই অংশ হিসাবে ১৪ অগস্ট, শনিবার কলকাতা, শিলিগুড়ি, মালদহ, দুর্গাপুর, কাঁথি এবং কৃষ্ণনগরে ‘দেশভাগ ও বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ’ বিষয়ে তাদের আলোচনাচক্র ছিল। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ১৪ অগস্টকে ‘দেশভাগের বিভীষিকা স্মরণ দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। এই দুইয়ের সূত্রে এ দিন কলকাতায় বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে দেশভাগ বিষয়ে বক্তৃতা করতে গিয়ে দিলীপবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘দেশভাগের ইতিহাস ভুললে চলবে না। তখন কিছু লোকের ক্ষমতা-পিপাসার জন্য বহু মানুষের প্রাণ, সম্বল, বহু মহিলার সম্মান নষ্ট হয়েছিল। আজ পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা কাশ্মীরের চেয়েও খারাপ। ভোটের পর থেকে ৫০ জন মহিলা ধর্ষিতা হয়েছেন। পুলিশ এফআইআর নেয় না। পুলিশকে অভিযোগ করতে গেলে বলা হয়, এখন সম্মান গিয়েছে, এর পরে প্রাণটাও যাবে।’’
১৯৪৬ সালের ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ এবং ‘দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং’-এর স্মরণে আগামিকাল, সোমবার জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে বিজেপির। ১৬ অগস্টকে রাজ্য সরকারের ‘খেলা হবে দিবস’ ঘোষণার প্রতিবাদও করা হবে সেখানে। ওই কর্মসূচির আগে এ দিন দিলীপবাবুর এই সব অভিযোগ তোলা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
দিলীপবাবুর যাবতীয় অভিযোগকে অবশ্য ‘অজ্ঞতা’ বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এই অজ্ঞতা নিয়ে দিলীপবাবুরা বাংলা দখল করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন! রাজ্যের মানুষ প্রত্যাখ্যান করে তাঁদের জবাব দিয়েছেন। বাংলার ঐতিহ্য, পরম্পরা থেকে এত দূরে থাকা মানুষের হতাশার কোনও জবাব হয় না।’’ রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘দেশভাগ হয়েছিল আরএসএস এবং মুসলিম লিগের সাম্প্রদায়িকতার জন্য। তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন আমাদের পূর্বসূরি গাঁধীজি, নেহরু। আর আমরা বাংলায় নারীকে সম্মান করি বলেই দুর্গাপুজো, কালীপুজো করি। এখানে হাথরস হয় না। আরএসএস মার্কা লোকেরা ওই ধরনের দু’-একটা কাণ্ড ঘটালে তার কঠোর শাস্তি হয়। রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের বাংলায় বিজেপির ধর্মান্ধতার স্থান নেই।’’