শূন্য হয়ে গেল রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের পদ। সোমবার রাত পর্যন্ত কমিশনার পদে নতুন কাউকে নিয়োগ করা হল না। —ফাইল ছবি।
শূন্য হয়ে গেল রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের পদ। সোমবার রাত পর্যন্ত কমিশনার পদে নতুন কাউকে নিয়োগ করা হল না। রাজ্য এবং রাজভবনের মধ্যে জটিলতার কারণেই শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে রাজ্যের সাংবিধানিক এই পদে নিয়োগ ঘিরে। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের পাঠানো ফাইল পড়ে রয়েছে রাজভবনে। তাতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ছাড়পত্র এখনও মেলেনি। রাজ্যের তরফে কমিশনার পদে দু’জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। কোনও নামেই এখনও পর্যন্ত সিলমোহর দেননি রাজ্যপাল। ফলে তাঁর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ঝুলে রয়েছে নতুন কমিশনারের নাম। রবিবারই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে সৌরভ দাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। রীতি মেনে উত্তরসূরির হাতে তাঁর দায়িত্বভার তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও, সোমবার তা আর সম্ভব হয়নি। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনারের পদটি খালি থাকলে সমস্যা তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনে কমিশনারের পদ শূন্য রয়েছে, বাংলায় এমন উদাহরণ খুব বেশি নেই। ১৯৯৪ সাল থেকে কমিশনের ২৯ বছরের সময়কালে দু’বার এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০০৯ সালে বাম আমলে মীরা পাণ্ডেকে দেরিতে নিয়োগ করা হয়েছিল। ওই বছর ১০ ফেব্রুয়ারি কমিশনার পদে এ গুপ্তের মেয়াদ শেষ হয়। ৭৯ দিন পর ৩০ এপ্রিল প্রাক্তন আইএএস অফিসার মীরাকে নিয়োগ করে বামফ্রন্ট সরকার। তৃণমূল জমানাতেও এর উদাহরণ রয়েছে। ২০১৯ সালে প্রাক্তন কমিশনার একে সিংহের অবসরের ২৩ দিনের মাথায় সৌরভকে কমিশনে নিয়ে আসে নবান্ন। এখন রাজ্যের সাংবিধানিক এই পদটি শূন্য থাকায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। তবে বিগত দু’বারের থেকে এ বার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। তখন পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এ ভাবে কমিশনার পদ খালি পড়ে থাকেনি। এখন যা হল। নবান্নের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সোমবার বিষয়টি নিয়ে নবান্নের তরফে রাজভবনে যোগাযোগ করা হয়। রাজভবন থেকে বলা হয়, দিল্লি গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। রাতে তিনি ফিরছেন। তার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হতে পারে।’’
নির্বাচন কমিশনার হিসাবে রাজ্যের প্রথম পছন্দ ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিন্হা। সেই মতো তাঁর নাম সুপারিশ করা হয় রাজভবনে। রাজ্যপাল প্রশ্ন তোলেন, শুধুমাত্র একজনের নাম কেন, বিকল্প নাম কেন প্রস্তাব করা হল না? গত সপ্তাহে দ্বিতীয় বিকল্প হিসাবে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধনের নাম প্রস্তাব করে রাজ্য। তাতেও সায় দেননি আনন্দ। রাজ্যের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘প্রথমে রাজীবের নামে মন্ত্রিসভার অনুমোদন না থাকায় রাজভবন থেকে ফাইল নবান্নে ফিরে গিয়েছিল। পরে মন্ত্রিসভার অনুমোদন দিয়ে আবার রাজভবনে ফাইল পাঠায়। বিকল্প নামও দেওয়া হয়। এত কাণ্ডের পরেও মাঝে দু’দিন কেটে গেলেও রাজ্যপালের মনোভাব বোঝা যায়নি। এই অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।’’
যদিও পরবর্তী কমিশনার পদে রাজীবই এগিয়ে রয়েছেন বলে আশা নবান্নের একাংশের।