যত্রতত্র: বটানিক্যাল গার্ডেন চত্বরে পড়ে আবর্জনা। —নিজস্ব চিত্র।
আশপাশের ফ্ল্যাট থেকে প্রতিদিনই উড়ে এসে পড়ে প্লাস্টিক ভর্তি আর্বজনা। সেই সঙ্গে রয়েছে মদের বোতল, প্লাস্টিকের গ্লাস, জলের বোতলও। তবে সেই সব উড়ে এসে কোনও পুরসভার ভ্যাটে নয়, পড়ছে বিরল প্রজাতির উদ্ভিদে ভরা এ রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ গবেষণা কেন্দ্র হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেনে! বটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দিনে উদ্যানের কর্মচারীদের চোখে পড়ে যাওয়ার ভয়ে রাতের অন্ধকারে পাঁচিল টপকে ওই সব আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। বিভিন্ন বিরল প্রজাতির গুল্মের উপরে সেই আর্বজনা এসে পড়ায় ইতিমধ্যেই সেগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ।
এ ভাবে আশপাশের ফ্ল্যাট থেকে উদ্যানের ভিতরে আর্বজনা ফেলার অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। উদ্যানের যুগ্ম-অধিকর্তা দেবেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই এই ঘটনা ঘটছে। উদ্ভিদকুল বাঁচাতে আমরাই পরিষ্কার করি। বার বার আবেদন করা হয়েছে এলাকাবাসীর কাছে। কিন্তু, কিছু দিন বন্ধ থাকার পরে ফের একই কাজ শুরু হচ্ছে।’’ কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, এলাকাবাসীর একাংশের এ হেন কার্যকলাপের জন্য চরম বিপদের মধ্যে পড়তে চলেছে উদ্যানের উদ্ভিদকুল। চরম পরিবেশ দূষণের জেরে আয়ু কমেছে উদ্ভিদদের, কিছু ইতিমধ্যে মারাও গিয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা এবং বটানিক্যাল গার্ডেন মর্নিং ওয়াকার্স অ্যাসোসিসেশনের সম্পাদক তাপস দাস বলেন, ‘‘এই ভাবে উদ্যানের ২ নম্বর গেটের বাঁ দিকে বি জি লেনের ফ্ল্যাটগুলি থেকে এবং নাজিরগঞ্জের দিকে রাস্তায় আর্বজনা ফেলার ঘটনা ঘটছে। এর আগে আমরাও বাসিন্দাদের বারণ করেছি। কিন্তু কেউ কথা শোনেননি।’’
এই ঘটনায় পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, বৃহস্পতিবার বটানিক্যাল গার্ডেনের পদস্থ কর্তারা মর্নিং ওয়াকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত স্বচ্ছতা অভিযানের দিন এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা ফেলা নিয়ে সচেতন করা হবে। সেই সঙ্গে
বটানিক্যাল গার্ডেনের চার পাশে সাফাই অভিযানে নামবেন উদ্যানের সমস্ত কর্মচারী-সহ প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। উদ্যানের যুগ্ম-অধিকর্তা জানান, ওই অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দা-সহ হাওড়া পুরসভা, হাওড়া জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় বিধায়ককেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কারণ, সকলে মিলে এগিয়ে না এলে আগামী দিনে এই বটানিক্যাল গার্ডেনকে বাঁচানো যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।