ফাইল চিত্র।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে বার বার মামলা হয়েছে। আবারও হল। তবে এ বারের অভিযোগ অন্য মাত্রার। মামলার আবেদনকারীদের প্রশ্ন, একই যোগ্যতায় এক দল প্রার্থী যদি চাকরি পেতে পারেন, তা হলে বাকিরা পাবেন না কেন? যোগ্যতায় সমান হয়েও চাকরিতে কেন বঞ্চিত তাঁরা? কলকাতা হাই কোর্টে এ বারের মামলার আবেদনে যুক্ত আছেন চার শতাধিক প্রাথমিক শিক্ষক পদপ্রার্থী।
নতুন মামলায় শুক্রবার রাজ্য সরকার-সহ সব বিবাদী পক্ষের হলফনামা তলব করেছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। আট সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে। এই মামলায় চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে সওয়াল করছেন শাসক দল তৃণমূলের সাংসদ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
মামলাকারীদের আইনজীবী কল্যাণবাবু ও এক্রামুল বারি জানান, এই চাকরিপ্রার্থীরা ২০০৪-০৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সেই সময় এক বছরের পিটিটিআই বা প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও প্রাপ্য ২২ নম্বর পাননি তাঁরা। অথচ ২০০১ সালের বিধি অনুযায়ী তাঁরা ওই ২২ নম্বর পাওয়ার অধিকারী ছিলেন। সেই সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বক্তব্য ছিল, যারা ওই প্রশিক্ষণ দেয়, সেই প্রাথমিক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় ২২ নম্বর দেওয়া হয়নি। পরবর্তী কালে ওই চাকরিপ্রার্থীরা এক বছরের ব্রিজ কোর্সও করে নেন।
কিছু প্রার্থী ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। শীর্ষ আদালত জানায়, ২০০৪-০৫ সালের প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের প্রাপ্য ২২ নম্বর দিতে হবে এবং পদ না-থাকলে নতুন পদ সৃষ্টি করে ওই প্রার্থীদের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। ২০১০ সাল পর্যন্ত যাঁরা কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছেন, তাঁরাই শুধু এই সুবিধা পাবেন বলেও জানায় সুপ্রিম কোর্ট। আদালতে কল্যাণবাবু ও এক্রামুল প্রশ্ন তোলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশ বর্তমান মামলাকারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না কেন? তাঁদের যুক্তি, এক যাত্রায় পৃথক ফল হতে পারে না।
এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে আদালত রাজ্য সরকার এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বক্তব্য জানতে চেয়েছে। তিন মাস পরে চূড়ান্ত শুনানি হবে।