পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
কর্তৃপক্ষ মনে করলে বিদ্যাদেবীর আরাধনা হতে পারে কলেজ-বিশ্বাবিদ্যালয়ে। তবে বিদ্যালাভ আপাতত অনলাইনে। অন্তত আগামী এক মাস এমনটাই চলবে। মাসখানেক পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বুধবার রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এখনই খুলছে না কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী মার্চে উপাচার্যদের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসবেন তিনি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত সেই বৈঠকেই নেওয়া হবে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ মনে করলে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো করা যাবে। তাঁর কথায়, ‘‘সরস্বতী পুজো করার কথাও বলেছি উপাচার্যদের। তবে কী ভাবে হবে, সে সিদ্ধান্ত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই নেবে। এ ক্ষেত্রে একটাই নির্দেশিকা, কোভিড ১৯-এর বিধিকে কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা যাবে না।’’
মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, চলতি মাসের ১২ তারিখ থেকে স্কুল খোলার ভাবনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। তবে প্রাথমিক ভাবে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য কোভিড বিধি মেনে খোলা হবে স্কুল— রাজ্য সরকার তেমনটাই ভাবছে বলে জানিয়েছিলেন পার্থ। সেই সময় তিনি আরও জানান, বুধবার উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর কলেজ-বিশ্বাবিদ্যালয় খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সেই বৈঠক শেষে জানানো হল, আপাতত খুলছে না কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। সশরীরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে হবে পড়ুয়াদের। তবে মার্চ মাসের শুরুতে প্রথম সেমেস্টারের যে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল, তা অনলাইনেই হবে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনও হবে অনলাইনেই।
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় না খুললেও গবেষণারত ছাত্রছাত্রীদের জন্য গবেষণাগার খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে উপাচার্যদের বৈঠকে। তবে স্বাস্থ্যও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে আপাতত কোথাও হস্টেল খোলা হচ্ছে না। বৈঠকে হাজির এক উপাচার্যের কথায়, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে সকল উপাচার্যের সহমতের ভিত্তিতে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। তার পরেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখনই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে না। খোলা হবে না হস্টেলও। তবে গবেষকদের জন্য গবেষণাগার খুলে দেওয়া হবে। পঠনপাঠনের মতো পরীক্ষাও হবে অনলাইনে।’’
পরে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, পঠনপাঠন কী ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা করে অভিভাবকদের কথা ভেবে, সবিস্তার আলোচনা হয়েছে। সহমতের ভিত্তিতে উপাচার্যদের করা আবেদন রাজ্য সরকার মেনে নিয়েছে। পার্থর কথায়, ‘‘আপাতত পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা ভেবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে না। উপাচার্যরা সহমত হয়ে সকলে আবেদন জানিয়েছিলেন, যে অড সেমেস্টারগুলো চলছে তা অনলাইনে হোক। ওই পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে ৩১ মার্চের মধ্যে। রাজ্য সরকার সেই আবেদন মেনে নিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওঁরা আলোচনা করে আমাকে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখনই হস্টেল খুলতে পারবেন না। তবে গবেষকদের ক্ষেত্রে প্রতিটি আলাদা আলাদা করে গুরুত্বের বিচারে গবেষণাগার ব্যবহার করতে দেওয়া হবে। প্রাক্টিক্যালের সুযোগসুবিধা তাঁরা পাবেন। তাঁদের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি সহমত পোষণ করেছি।’’