প্রতীকী ছবি।
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংশোধিত বেতনক্রমের আদেশনামা সোমবার প্রকাশ করল রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। জানানো হয়েছে, নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এই বেতনক্রম কার্যকর হবে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। কিছু ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করা এবং নির্দিষ্ট মেয়াদের পরে অধ্যক্ষদের পড়ানোর কাজে ফিরিয়ে বেতন কমানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। শিক্ষক সংগঠনগুলি আবার আন্দোলনে নামবে বলেও জানিয়েছে।
সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুসারে নভেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই শিক্ষকদের বেতন-কাঠামো ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বর্ধিত বেতন পাওয়া যাবে না বলে জানানোয় ক্ষোভ ছড়াচ্ছিল। আদেশনামায় বর্ধিত বেতন না-পাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, এমফিল, পিএইচ ডি থাকলে যে-ইনক্রিমেন্ট মিলত, তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
আদেশনামা জানাচ্ছে, স্নাতকোত্তর পঠনপাঠনের কলেজের অধ্যক্ষেরা যে-ভাতা পান, সাধারণ কলেজের অধ্যক্ষদের ভাতা তার চেয়ে কম হবে। আগে সব কলেজের অধ্যক্ষ-পদ ছিল প্রফেসর-সমান। এখন স্নাতকোত্তর পড়ানোর কলেজের অধ্যক্ষ-পদই প্রফেসর-পদের সমতুল বলে গণ্য হবে। শুধু স্নাতক পঠনপাঠনের কলেজের অধ্যক্ষ-পদ এ বার থেকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের সমতুল হল বলে আদেশনামায় জানানো হয়েছে। অধ্যক্ষ-পদের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে অধ্যক্ষদের আবার পড়ানোর কাজে ফিরে যেতে হবে। এবং তখন তাঁদের বেতন ও ভাতা কমে সাধারণ শিক্ষকদের সমতুল হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ‘দেশে বিজেপিকে একা করে দিন’, আহ্বান মমতার
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থিব বসু এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় যৌথ বিবৃতিতে জানান, মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, এ বার আদেশনামায় স্পষ্ট, ২০১৬ থেকে বকেয়া দেওয়া হবে না। এই বঞ্চনা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদাকেই ক্ষুণ্ণ করল। ন্যায্য পাওনা ও মর্যাদা পুনরুদ্ধারের দাবিতে একসঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণ করা হবে। শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি এ দিন জানান, চার বছরের প্রাপ্য বকেয়া পাবেন না শিক্ষকেরা। আদেশনামায় মহার্ঘ ভাতারও কোনও উল্লেখ নেই। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে একযোগে আন্দোলনে নামবেন। সরকারি আদেশনামা নিয়ে ওয়েবকুটা-র প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজের বক্তব্য, শিক্ষকদের এমফিল, পিএইচ ডি থাকলে যে-ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হত, তা বন্ধ করে দিয়ে অবমাননাই করা হল। আদেশনামায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ভাতা বৃদ্ধিরও কোনও উল্লেখ নেই।