ছবি: সংগৃহীত।
প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। তাতে জল ঢেলে দিল দানব যন্ত্রের ‘গোপন অসুখ’। যার প্রেক্ষিতে পূর্ব ঘোষণামতো চালু হচ্ছে না প্রতি দিন অন্তত তিন হাজার নমুনা পরীক্ষা করতে সক্ষম, স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র ‘কোবাস ৮৮০০’। নাইসেড (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজ়িজ়েস) সূত্রের খবর, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ‘কোবাসের’ চলতি মাসে চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নতুন করে বিপত্তি না-হলে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চালু হতে পারে ছ’কোটি টাকার বিদেশি যন্ত্র।
গত শুক্রবার যন্ত্রের ভার আইসিএমআর-নাইসেডের হাতে তুলে দেন যন্ত্র সরবরাহকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা। আগামী সোমবার থেকে তিন হাজার নমুনা পরীক্ষার জন্য কোবাস প্রস্তুত বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েও দেন নাইসেড কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এর পরেই সংস্থার তরফে জানানো হয়, যন্ত্রের একটি মডিউল বিকল হওয়ায় এখন প্রতিদিন তিন হাজার নমুনা পরীক্ষা করতে পারবে না ‘কোবাস’। যা পরিস্থিতি তাতে দিনে ১২০০-র বেশি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে না। সড়কপথে যন্ত্র নিয়ে আসার সময় একটি মডিউল খারাপ হয়েছে বলে বুধবার নাইসেড কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে যন্ত্র সরবরাহকারী সংস্থা।
গত ২৭ জুলাই ভিডিয়ো কনফারেন্সে বাংলার পাশাপাশি মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশের এই যন্ত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গেই প্রথম কোবাস যন্ত্রের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এর পরে দু’সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও অন্তিম লগ্নে যান্ত্রিক ত্রুটির কথা কেন জানা গেল? বিশেষ করে কোভিড নমুনা পরীক্ষা বৃদ্ধির জন্য যখন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের চাপ রয়েছে। এই আবহে কবে থেকে কোবাসের সুবিধা মিলবে তা নিয়ে ক্রমাগত খোঁজ নিচ্ছিল স্বাস্থ্য ভবন। শেষ পর্যন্ত যন্ত্রের অসুখের কথা স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: দিলীপকে দিল্লিতে তলব নড্ডার
‘কোবাসের’ অসুখ ‘গোপন’ করা হয়েছিল বলে জানান নাইসেড-কর্ত্রী শান্তা দত্ত। কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার অধিকর্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘প্রতি দিন তিন হাজার নমুনা পরীক্ষা করার প্রশ্নে আমাদের সদিচ্ছার অভাব নেই। কিন্তু উদ্বোধনের পরে দু’সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও যন্ত্র যে ত্রুটিপূর্ণ, তা সংস্থা আমাদের জানায়নি। তিন হাজার নমুনা পরীক্ষা করার আগের মুহূর্তে বলছে, মডিউল খারাপ হওয়ার জন্য প্রতি দিন ১২০০’র বেশি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে না।’’
নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য চাপ যে কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার উপরেও রয়েছে তা জানিয়ে শান্তাদেবী বলেন, ‘‘আমাদের হাতে তো কিছু নেই! নতুন মডিউল সড়কপথে ২১ অগস্ট পৌঁছবে বলে সংস্থা জানিয়েছে। যন্ত্রের প্রতিটি অংশ লাগাতে সাত দিন সময় লেগেছিল। সেগুলি আবার সব খুলে নতুন মডিউল লাগাতে হবে। যন্ত্র কবে চালু হবে, তা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের আগে বলা সম্ভব নয়।’’