সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, দেউচা পাঁচমিতে আপাতত কারও জমি দখল করা হবে না। রাজ্য সরকারের যা জমি আছে তাতেই প্রথম দফায় বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ হবে। দ্বিতীয় দফায় জমি দরকার পড়তে পারে। তবে এলাকার বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বললেন,‘‘আপনাদের ঘড়-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, স্কুল, কলেজ, ক্ষতিপূরণ এমনকি চাকরির ব্যবস্থা করে তারপরই বাকি কাজ এগোবে।’’ মমতা বললেন, ‘‘তবে বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে আপনাদের স্বর্ণযুগ আসবে। এটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি।’’
ভেটিভার নামের এক ধরনের ঘাস গঙ্গার ভাঙন রুখতে সাহায্য করে, জানালেন মমতা। ভাঙন রুখতে এই ঘাস লাগানোর ব্যবস্থা করতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টেয় চেম্বারগুলির সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সভাঘরে বসবে বৈঠক। থাকবে ফিকি এমনকি জেলাগুলির চেম্বার অফ কমার্সও। সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীরাও থাকবেন।
তাজ বেঙ্গল থেকে চেতলা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার গঙ্গার ড্রেজিং করার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। জানালেন, এতে কলকাতায় জল জমার প্রবণতা অনেকটাই কমতে পারে। ‘‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মাথায় রেখেই এটা করতে হবে’’ বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিঘায় পাথর বসানোর প্রক্রিয়ায় গলদ ছিল। ঢালাই করা জায়গার উপর পাথর বসানো হয়েছে। কিন্তু সেটা নিয়ম নয়। খুঁড়ে মাটি বের করে তার উপর পাথর বসাতে হবে, বললেন মমতা।
আবেদন পত্রের ব্যাপারে মমতার সতর্ক বার্তা, ‘‘এক সঙ্গে অনেক আবেদন করে যা খুশি তাই লিখে দেওয়া যাবে না। নিজে আবেদন করবেন। ড্রপ বক্সে আবেদন পত্র জমা দেবেন। শহরাঞ্চলে এসডিও অফিস এবং গ্রামাঞ্চলগুলিতে বিডিও অফিসে ত্রাণের আবেদন জমা দিতে হবে।’’
দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্প কিন্তু দুয়ারে সরকারের মতো সব ব্লকে হবে না বললেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘‘সব ব্লকে তো সমস্যা হয়নি। যে যে জায়গায় ইয়াসের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যে সব জায়গায় টর্নোডোর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যে সব ব্লকে জল ঢুকে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই সব ব্লকেই কিন্তু দুয়ারে ত্রাণ-এর শিবির হবে।’’
‘‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিছু চাইনি। শুধু ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দিয়ে বলেছি, আপনি যা ভাল বুঝবেন দিন’’, জানালেন মমতা
‘‘কিছু কিছু দফতর আছে অনেক বড়। এগুলো একার পক্ষে সামলানো সম্ভব নয়। এগুলির বিকেন্দ্রীকরণ করা দরকার’’, বললেন মমতা। মুখ্যসচিবকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি ভাঙলে তা সামর্থ মতো সারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে সরকার। তবে আমরা গরিবের সরকার। কেন্দ্রের কাছ থেকে সেরকম টাকা পাই না। তাই ক্ষমতা অনুযায়ী সাহায্য করা হবে।’’
‘‘অনেক ইট ভাটা জলে ডুবে গিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি ঠিক করার কাজে এই কর্মীদের কাজে লাগানো যেতে পারে’’, পঞ্চায়েত দফতরকে নির্দেশ দিলেন মমতা। এ ছাড়া মৎস্যদজীবীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের কাজে লাগান। এমনকি পরিযায়ী শ্রমিকদেরও কাজে লাগাতে পারেন।
মমতা বললেন, ‘‘নীতি আয়োগের কাছে আরও ৫০০ ফ্লাড শেল্টারের তৈরি করার টাকা চাইব আমরা। যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। তাই এই বন্যা ত্রাণ কেন্দ্র বানাতে হবে। এছাড়া কোল্ড স্টোরেজও বানাতে হবে বেশি করে। মজুতের জন্য গুদাম বা ওয়ার হাউস বানাতে হবে।’’
প্রাকৃতিক দুর্যোগকে রক্ষা করতে পারে প্রকৃতিই, জানালেন মমতা। ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রকৃতিই সহায়’ প্রকল্পের পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। সুন্দরবনে দুর্যোগ এড়াতে সুন্দরী-সহ অন্য গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে। এছড়া পূর্ব মেদিনীপুরে ঝাউবন বাড়ানোরও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
নির্মাণ কর্মীদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করে নির্মাণের কাজে লাগানো যেতে পারে। মাস্ক পরে, করোনা বিধি বজায় রেখে কাজ করানো যাবে।
১০ শতাংশ কর্মী নিয়ে তথ্য প্রযুক্তির অফিস গুলি কাজ করতে পারে, জানালেন মমতা।