ভুয়ো বার্তা শেয়ার করে সতর্কবার্তা কলকাতা পুলিশের পেজ থেকে। নিজস্ব চিত্র
সদ্য লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশ হয়েছে। তখনও জয়ের উদ্যাপন শেষ হয়নি তৃণমূলে। এর মধ্যে তাদের গ্রুপে গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ল একটি বার্তা, সঙ্গে একটি লিঙ্ক। সেই হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার নির্যাস: ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সমস্ত পশ্চিমবঙ্গের মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য ২৩৯ টাকায় ২৮ দিনের ফ্রি রিচার্জ অপেক্ষা করছে।...’’ ওই বার্তার সঙ্গে ‘westbengalfreerecharge.blogspot.com’ নামের একটি লিঙ্ক শেয়ারও করা হয়েছে। যা নিয়ে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পুলিশ-প্রশাসন। কারণ, পোস্টটিতে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে যে কেউ লিঙ্কে ক্লিক করে প্রতারিত হতে পারেন। কলকাতা পুলিশ এর মধ্যেই লিঙ্কটিতে ক্লিক করতে মানা করে বিজ্ঞপ্তি ও সমাজমাধ্যমে পোস্ট শেয়ার করেছে।
কলকাতা পুলিশের তরফে সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, গ্রাহকেরা ওই লিঙ্কে ক্লিক করামাত্রই প্রতারণার শিকার হবেন। কলকাতা পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছে, যে প্রতারকেরা ওই বার্তা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে শুধু কলকাতা নয়, ওই বার্তা ছড়িয়েছে নানা জেলাতেও। দিনকয়েক আগে নদিয়ার করিমপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় এমন বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। বর্ধমান ১ ব্লকেও কেউ কেউ এই বার্তা পেয়েছেন। তবে স্থানীয় পুলিশের দাবি, ওই বার্তা এলাকায় ব্যাপক পরিমাণে ছড়ালেও এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যক্তির প্রতারণার অভিযোগ পুলিশের কাছে আসেনি। তবে বিষয়টি ভাবাচ্ছে পুলিশকর্তাদের।
পুলিশের উদ্বেগ স্বাভাবিক। অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর নাম দেখে সেই লিঙ্কে ক্লিক করার কথা ভাবনাচিন্তা করেছেন বলে জানালেন। নদিয়ার করিমপুরেরই আনন্দপল্লির বাসিন্দা পেশায় দুধ ব্যবসায়ী গণেশ ঘোষ বলেন, ‘‘শুক্রবার সকালে আমার মোবাইলে ওই মেসেজ আসে। ভোটের ফলাফল বেরনোর পরে এই মেসেজ পেয়ে ভাবলাম, হয়তো বা সত্যি! পরে অবশ্য ছেলে আমায় সাইবার প্রতারণার বিষয়ে বুঝিয়ে দিল।’’ শিকারপুর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সুশান্ত স্বর্ণকার বলেন, ‘‘আমি আর আমার পরিচিত অনেকেই ওই মেসেজ পেয়েছি। আমায় যিনি মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, তিনিও আমার পরিচিত। তাই কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়।’’ তবে বিষয়টি জালিয়াতি হতে পারে ধরে নিয়ে তিনি আর লিঙ্কে ক্লিক করেননি। পরে তাঁর পরিচিত এক জন বিষয়টি পুলিশকে জানায়। তার পরই জেলা পুলিশের তরফে ওই গ্রুপে সতর্কবার্তা দিয়ে পোস্ট করা হয়। তাতে সচেতন হন অনেকে।
তৃণমূলের করিমপুর ১ ব্লকের যুব সভাপতি সৌমিক সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূলের অনেক পদাধিকারী, কর্মী-সমর্থকেরা আমায় ফোন করেছিলেন। অনেকেই ভেবেছিলেন যে, সদ্য লোকসভা নির্বাচনে সাফল্যের জন্য হয়তো বিনামূল্যে রিচার্জ, সত্যি হলেও হতে পারে। তৎক্ষণাৎ বিষয়টি পুলিশকে জানাই।’’ তেহট্টের এসডিপিও শুভতোষ সরকার বলেন, ‘‘ভুয়ো বার্তা পেয়ে বেশ কিছু জন থানায় ফোন করেন। তার পরেই খোঁজ শুরু করেছি আমরা।’’