মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে বঞ্চিতদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার কাজ শুরু করবে নবান্ন। সেই পর্যায়ে মৃত জব কার্ড হোল্ডারদের খোঁজার কাজ শুরু করেছিল নবান্ন। টাকা দেওয়ার কাজ শুরু করার আগে সেই তালিকাও তৈরি হয়ে গিয়েছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা পাঁচ দিন, অর্থাৎ ১ মার্চ পর্যন্ত চলবে ১০০ দিনের কাজের বঞ্চিতদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কাজ। সেই কাজে যাতে কোনও খামতি না থেকে যায়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে শুক্রবার সব জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট সকলকে এই ব্যাপারে সচেতন করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক। যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ হয়ে গেলেও, মৃত জব কার্ড হোল্ডারদের নামের তালিকাও তৈরি করেছে প্রশাসন।
২০২২ সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে, ও পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে ওই প্রকল্পে টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই কৌশলে কাজ না হওয়ায় আন্দোলনে নামে বাংলার শাসকদল। এ বছরের গোড়াতেই শেষমেশ মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, বঞ্চিতদের রাজ্য সরকারই বকেয়া অর্থ মিটিয়ে দেবে। সেই কাজে নেমে নবান্ন জানতে পেরেছে যে, এর মধ্যেই মারা গিয়েছেন ১২ হাজার জব কার্ড হোল্ডার। কোনও ভুল অ্যাকাউন্টে টাকা যাক, চাইছে না নবান্ন। তাই টাকা দেওয়ার আগে বারংবার যাচাই করে নিয়ে বঞ্চিতদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তার পর প্রতিটি জেলা থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে ধরে ন্যায্য প্রাপকদের তালিকা পাঠানো হয়েছে পঞ্চায়েত দফতরে।
যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হবে, তাঁদের নাম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য পঞ্চায়েত দফতরের নির্দিষ্ট পোর্টালে তুলছে জেলা প্রশাসন। আর এই তালিকাতেই দেখা যাচ্ছে, কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতে ন’জন, আবার কোনওটিতে ছ’জন জব কার্ড হোল্ডার আর জীবিত নেই। তাঁদের নামের পাশে লেখা হচ্ছে ‘ডেড’। সমস্ত তালিকা যাচাইয়ের পর প্রশাসনিক কর্তারা প্রায় ১২ হাজার এ রকম নাম পেয়েছেন। তাই এ বার মৃতদের পৃথক একটি তালিকা তৈরি হচ্ছে। যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদেরও পাশে থাকছে রাজ্য সরকার। তাঁদের পরিবারকেও টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে মৃত জব কার্ড হোল্ডারের ন্যায্য উত্তরাধিকারী কে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই এই সব বিষয়ে পরিবারের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) আনতে বলা হয়েছে। সেই এনওসি পেলেই প্রয়াত জব কার্ড হোল্ডারদের পরিবারের উত্তরাধিকারীর অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে।
রাজ্য প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, ২৬ ফেব্রুয়ারি সমস্ত বঞ্চিতদের অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকবে। কিন্তু প্রশাসন সূত্রে খবর, ধাপে ধাপে ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত বঞ্চিতদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হবে। বঞ্চিতরা টাকা পেলেন কি না, তা জানার জন্য ১ মার্চ থেকে বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করা হবে। সেখানে সক্রিয় থাকবেন দেড় হাজার জন কর্মী। জবকার্ড হোল্ডারদের ফোন করে তাঁরা জানবেন, তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে কি না। সেই মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন নবান্নের শীর্ষ কর্তারা।