বুধবার বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হাতির সংখ্যাবৃদ্ধির প্রসঙ্গ তোলেন। — ফাইল ছবি।
রাজ্যে হাতির সংখ্যা অনেকটা বেড়েছে। বুধবার আচমকাই বিধানসভায় এসে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, এ জন্য সুন্দরবন যাচ্ছেন বনদেবীর পুজো দিতে। হাতি বা বাঘের হানায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও দিয়েছেন।
রাজ্য বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়েছে। বুধবার হঠাৎই বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হাতির সংখ্যাবৃদ্ধির প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, ‘‘হাতি অনেকটা বেড়ে গেছে। আগামী মঙ্গলবার হিঙ্গলগঞ্জ যাচ্ছি বনদেবীর পুজো দিতে।’’ এর পরেই বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে জঙ্গল লাগোয়া মানুষজনের স্বার্থে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন। বলেন, ‘‘ফরেস্টের মানুষদের স্বার্থে ব্যবস্থা করতে হবে।’’
রাজ্যে হাতি বা বাঘের হানায় প্রায়ই মৃত্যু হয় সাধারণ মানুষের। এ বার সেই নিয়েও সক্রিয় পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। বুধবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হাতি বা বাঘের হানায় মৃত্যু হলে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়া হবে।’’
বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বিধানসভায় প্রশ্ন করেছিলেন, হাতির হানা নিয়ে কী ব্যবস্থা করছে রাজ্য। জবাবে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় রাজ্য সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। জানান, আটটি হাতির করিডরের পরিকল্পনা করেছে বন দফতর। এক-একটির দৈর্ঘ্য হবে পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার। প্রত্যেকটি করতে খরচ পড়বে ২০ কোটি টাকা। উত্তরবঙ্গে বক্সা-তিতি, তিতি-দুমচি-রেতি, মোরাঘাটা-সেন্ট্রাল ডায়না, রেতি-ডায়না, জয়ন্তী-রায়ডাক, তিতি-সেন্ট্রাল ডায়নায় করিডর গড়ার প্রস্তাব রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গেও চারটি জায়গায় হাতির করিডর গড়ার প্রস্তাব রয়েছে। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর। ফেন্সিং থাকবে। তবে তা যাতে বন্যপ্রাণীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে বাধা না হয়, তা-ও মাথায় রাখা হবে।
আগামী মঙ্গলবার সুন্দরবন সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে সুন্দরবন নিয়ে পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। বুধবার বলেন, ‘‘সুন্দরবন নিয়ে একটা মাস্টার প্লান করা হয়েছে। সেই মাস্টারপ্ল্যান নীতি আয়োগে জমা দেওয়া হয়েছে। এক্সপার্ট কমিটি গড়া হয়েছে। এটা অনুমোদিত হলে সমস্যার সমাধান হবে।’’ বনমন্ত্রী জানান, এই বিশেষজ্ঞ কমিটির মাথায় রয়েছেন নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র। পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন, সুন্দরবনে ১৫ কোটি ৫৪ লক্ষ ম্যানগ্রোভ লাগিয়েছে বন দফতর।