(বাঁ দিক থেকে) রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস, কলকাতা পুলিশের উপ নগরপাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজভবনে তাঁর শ্লীলতাহানি হয়েছে এই মর্মে সেখানকার এক মহিলা অস্থায়ী কর্মী হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে কলকাতা পুলিশ। সেই তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। এই ইন্দিরার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের কাছে সেই সময় নালিশও ঠুকেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কেন্দ্রের কাছে তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো এবং সেই গুজবে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে ওই পুলিশকর্তা রাজ্যপালের পদকে কলঙ্কিত করেছেন। ইন্দিরার পাশাপাশি তিনি নালিশ করেছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নামেও। সেই ঘটনার তিন মাস পর বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসে ইন্দিরাকে বিশেষ পুলিশ পদক দিয়ে সম্মানিত করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বাধীনতা দিবসে রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের ভাল কাজের জন্য পদক দিয়ে সম্মান জানানো হয় রাজ্য সরকারের তরফে। বৃহস্পতিবারও রাজ্যের চার পুলিশ আধিকারিককে বিশেষ পদক দিয়েছেন মমতা। তাঁদের মধ্যেই এক জন ইন্দিরা। নবান্ন সূত্রে খবর, আইপিএস অফিসার এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরাকে ওই পদক দেওয়া হয়েছে ২০২৩-২৪ সালে তাঁর প্রশংসনীয় কাজের জন্য।
২০২৪ সালের মে মাসে হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ করেন এক মহিলা। তিনি রাজভবনে কর্মরত অস্থায়ী কর্মী। মহিলার অভিযোগ ছিল, রাজভবনে তাঁর শ্লীলতাহানি হয়েছে। পরে ওই অভিযোগের ভিত্তিতে শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের হয়। তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন ইন্দিরা। এর কিছু দিনের মধ্যেই সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে রাজ্যপালের পদকে কলঙ্কিত করার অভিযোগ উঠেছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত এবং ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো এবং সেই গুজবে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে তাঁরা রাজ্যপালের পদকে কলঙ্কিত করেছেন। পিটিআইয়ের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘‘ওঁরা (বিনীত ও ইন্দিরা) যা করেছেন, তা একজন সরকারি কর্মচারীর কাছ থেকে আশা করা যায় না।’’ এ বার সেই ইন্দিরাকে সম্মানিত করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজভবন থেকে অপসৃত আমলাকে এর আগে ‘বড় দায়িত্ব’ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। গত বছর রাজ্যপালের সচিব পদ থেকে অপসারিত হয়েছিলেন নন্দিনী চক্রবর্তী। ২০২৪ সালের শুরুতেই রাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব হিসাবে নাম ঘোষণা করা হয় আইএএস অফিসার নন্দিনীর। অপসারণের এক বছরের মধ্যেই ওই সিদ্ধান্ত নেন মমতা।
বৃহস্পতিবার ইন্দিরা ছাড়া বাকি যে তিন পুলিশ কর্তাকে পদক দিয়ে সম্মানিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাঁরা হলেন— অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) আইপিএস অফিসার দিব্যজ্যোতি দাস। এসপি পদমর্যাদার ওই অফিসার বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন। ভাল কাজের জন্য পদক পেয়েছেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার শ্রী মুকেশ এবং ডিআইজি (নিরাপত্তা) আভারু রবীন্দ্রনাথ।