বিলেত সফর শেষে কলকাতায় ফিরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কর্মময় এবং বর্ণময় বিলেত সফর সেরে বাংলায় ফিরে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ কলেজের আমন্ত্রণেই ছিল এই সফর। তবে এর সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল আরও কর্মসূচি। কলকাতায় ফিরেই মুখ্যমন্ত্রী এ বার ব্যস্ত হয়ে পড়বেন ইদ নিয়ে। প্রতি বছরই রেড রোডে ইদের নমাজের সময় উপস্থিত থাকেন তিনি। সোমবারই ইদ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও তা ঘোষণা করা হয়নি। দুর্গাপুজোর সময় যেমন পুজো উদ্বোধন থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত যুক্ত থাকেন মুখ্যমন্ত্রী, তেমনই ইদ বা বড়দিনের মতো অনুষ্ঠানেও অংশ নেন।
ইদের কয়েক দিনের মধ্যেই রামনবমী। মমতার প্রশাসনের কাছে খবর, এই দুই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় অশান্তির ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে কোনও কোনও মহল থেকে। কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অবতরণের কিছু ক্ষণ আগেই এ নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, পুলিশ সতর্ক রয়েছে এবং যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি কঠোর হাতে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ফিরে এ সব নিয়েও প্রশাসনিক রিপোর্ট দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সংক্রান্ত কথাবার্তা বলবেন।
কলকাতায় নামার পর বিমানবন্দর থেকে গাড়ি ধরে রওনা হয়ে যান মমতা। দীর্ঘ বিমানযাত্রার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আর কথাবার্তা বলেননি। তবে ফেরার পথে সফরসঙ্গীদের জানিয়েছেন, এ বারের সফরে তিনি সন্তুষ্ট।
মমতা বিদেশ সফরে রওনা হয়েছিলেন গত শনিবার সন্ধ্যায়। আট দিনের মাথায় শনিবার সন্ধ্যাতেই কলকাতায় ফিরলেন। যাতায়াতের দু’দিন বাদ দিয়ে মোট ছ’দিনের বিলেত সফর ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। ছিল ভারতীয় হাই কমিশনের আমন্ত্রণ, ছিল বাণিজ্য সম্মেলন, আলাদা আলাদা বাণিজ্য বৈঠক, অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজে বক্তৃতা। সেই বক্তৃতার মাঝে আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে হালকা বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল। তবে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে সংযত মমতা শান্ত ভাবেই সেটা সামলেছিলেন। প্রায় প্রতি দিন নিয়ম করে হেঁটেছেন রাস্তায়। সব মিলিয়ে আট দিনের সফর ছিল ব্যস্ততায় ভরা। কিন্তু সবটাই আবার গুরুগম্ভীর নয়।
হিথরো বিপর্যয়
গত শনিবার (২২ মার্চ) সকালের উড়ানে দুবাই হয়ে লন্ডন রওনা হওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জেরে হিথরো বিমানবন্দর বন্ধ ছিল প্রায় ১৮ ঘণ্টা। বাতিল হয় হাজার দেড়েক বিমান। কয়েক ঘণ্টা পিছিয়ে যায় মমতার যাত্রাও। পরিবর্তিত সূচিতে সকালের বদলে সন্ধ্যার বিমানে রওনা হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার ভারতীয় সময় দুপুরে লন্ডনে পৌঁছেছিলেন মমতা। ছিলেন বাকিংহাম প্যালেসের কাছেই সেন্ট জেম্স কোর্ট হোটেলে। এর আগের বার গিয়েও ওই হোটেলেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার বাণিজ্য-বার্তা
গত মঙ্গলবার সেন্ট জেম্স কোর্টের ব্যাঙ্কোয়েটেই বসেছিল বাণিজ্য সম্মেলন। যে বাণিজ্য সম্মেলন হয়েছে গত মাসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সূত্র ধরে। যেখানে ব্রিটেনের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শিল্পপতিরা ছিলেন। ছিলেন বাংলায় ব্যবসা করা বাঙালি-অবাঙালি শিল্পপতিরাও। প্রতিনিধি দলে ছিলেন, ধানসেরি ভেনচার্সের এগ্জ়িকিউটিভ চেয়ারম্যান চন্দ্র কুমার ধানুকা, অম্বুজা নেওটিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষ নেওটিয়া, গ্রাফিতি ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান কেকে বাঙুর, টেগা ইন্ডাস্ট্রিজ়ের মেহুল মোহানকা, শ্রী সিমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান তথা বাংলায় ফিকির চেয়ারম্যান প্রশান্ত বাঙুর, জিইইসিএলের ভাইস চেয়ারম্যান তথা এমডি প্রশান্ত মোদী, লক্ষ্মী গ্রুপের চেয়ারম্যান রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, প্যাটন ইন্টারন্যাশনালের এমডি সঞ্জয় বুধিয়া, সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সত্যম রায়চৌধুরী, আরপি সঞ্জীব গোয়েন্কা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান শাশ্বত গোয়েন্কা, রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের প্রেসিডেন্ট তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা, জেনেসিসের কর্ণধার উজ্জ্বল সিন্হা, টিটাগড় রেলওয়ে সিস্টেমের এমডি উমেশ চৌধুরী, ফিকির ডিজি জ্যোতি ভিজ, ফিকির ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মৌসুমী ঘোষ। যে কোনও বিনিয়োগকারীর কাছেই পরিবেশ, শ্রমিকের মান এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ সূচক। সেই তিন সূচকের কথাই মমতা উল্লেখ করেছেন ব্রিটেনের বাণিজ্য বৈঠকে। বাম সরকারের সময়ের ধর্মঘটের সংস্কৃতির কথা উল্লেখ করে মমতা বলেছেন, ‘‘আগের সরকারের সময়ে ধর্মঘটের কারণে অনেক কর্মদিবস নষ্ট হত। কিন্তু আমরা বন্ধের সংস্কৃতিই বন্ধ করে দিয়েছি। এখন আর বাংলায় কোনও শ্রমদিবস নষ্ট হয় না।’’
অক্সফোর্ড দর্শন
বৃহস্পতিবার অতিথি মমতাকে প্রাচীন অক্সফোর্ডের নানা মাইলফলকের সামনে নিয়ে গিয়ে তার ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত করেন অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ। শেল্ডনিয়ান থিয়েটার, বডলিয়ান লাইব্রেরির মতো কয়েক শতাব্দী প্রাচীন ভবনে নিয়ে যাওয়া হয় মমতাকে। শেল্ডনিয়ান থিয়েটারেই প্রতি বছর অক্সফোর্ডের সমাবর্তন হয়। যে গ্রন্থাগারের সামনে মমতাকে নিয়ে দাঁড় করানো হয়েছিল, অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত নিরাপত্তার কারণে সেখানে বই বেঁধে রাখা হত শিকল দিয়ে। যদিও এখন সেই রেওয়াজ আর নেই। ষোড়শ শতাব্দীর গোড়ায় এই গ্রন্থাগার তৈরি করেছিলেন ইংরেজ কূটনীতিক থমাস ব়ডলে। গ্রন্থাগারে এখন বইয়ের সংখ্যা এক কোটি ৩০ লক্ষ। ব্রিটিশ লাইব্রেরির পরে এটিই বিলেতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রন্থাগার। গ্রন্থাগারের সামনেই ডিভাইনিটি স্কুল। যেখানকার প্রকাণ্ড হলে হ্যারি পটারের তিনটি ছবির শুটিং হয়েছিল।
কেলগে বক্তৃতা
অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজের আমন্ত্রণে ‘সামাজিক উন্নয়ন: শিশু, মহিলা ও প্রান্তিক অংশের মানুষের ক্ষমতায়ণ’ শীর্ষক বক্তৃতা করেন মমতা। সেখানেই তিনি কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। আলোকপাত করেন শিল্পায়নের পরিবেশ বদলের বিষয়েও। সেই বক্তৃতায় মমতা বোঝাতে চান, নিম্নবিত্ত পরিবার থেকেই তাঁর উত্থান। রাজনীতি করতে গিয়েই তিনি নানা অংশের মানুষের জীবন-যন্ত্রণাকে প্রত্যক্ষ করেছেন। তাই প্রশাসক হিসাবে তাঁদের উন্নয়নেই তাঁর মনোনিবেশ। কেলগ কলেজের কাছে তিনি কলকাতায় ক্যাম্পাস তৈরিরও আর্জি জানিয়ে এসেছেন। কথা দিয়েছেন, কেলগ কর্তৃপক্ষ সবুজ সঙ্কেত দিলেই তিনি জমি, পরিকাঠামোগত সমস্ত বন্দোবস্ত করে দেবন।
বিক্ষোভের মুখে সংযত মমতা
লন্ডনে তাঁর সফরের সময়ে যে ‘হট্টগোল’ করার পরিকল্পনা হচ্ছে, তা কলকাতায় থাকতেই বলে গিয়েছিলেন মমতা। কেলগে মমতার বক্তৃতার মাঝেই সেই বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রসঙ্গক্রমে মমতার বক্তৃতায় আসে কলকাতায় এখনকার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের বিনিয়োগের কথা। আসে টাটা গোষ্ঠীর নামও। টাটার নাম উচ্চারিত হতেই সভাঘরের একেবারে পিছন থেকে মৃদু গুঞ্জন শুরু হয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তা বিক্ষুব্ধ কলরবের আকার নেয়। দর্শকাসনের বাকিরা দাঁড়িয়ে পড়েন। কিন্তু মমতা ছিলেন সংযত। দেখা যায় যে, হাতেগোনা কয়েক জন পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। মমতা যখন তাঁদের জবাব দিচ্ছেন তখন করতালিতে ফেটে পড়ছিল সভাকক্ষ।
সমবেত পাল্টা প্রতিরোধের মুখে যখন বিক্ষোভ মিইয়ে আসছিল, তখন কিছুটা চ্যালেঞ্জের সুরে মমতা বলেছিলেন, ‘‘আমি বছরে দু’বার করে অক্সফোর্ডে আসব। যত বার বলবেন, তত বার আসব। আমাকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমায় ভাল করে কোনও কাজ করে দিতে বললে ঘর মুছে, কাপড় কেচে, রান্না করে বা বাসন মেজে দিতে পারব। কিন্তু ভয় দেখালে হবে না। আমি ভয় পাই না। আমি আমার মাথা নত করি একমাত্র জনতার সামনে। আর কারও সামনে নয়।’’
অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাঁরা গোলমাল করেছেন, তাঁরা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বা গবেষক নন। সকলেই বহিরাগত। কর্তৃপক্ষের তরফে গোটা ঘটনার জন্য বারংবার মমতার কাছে দুঃখপ্রকাশও করা হয়েছে। তার পর শুক্রবার লন্ডনের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ঘনিষ্ঠবৃত্তে মমতা বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, বিক্ষোভকারীদের কি বার করে দেবেন? আমিই বারণ করেছিলাম।’’ মমতা এ-ও বলেন, ‘‘গণতন্ত্রে প্রশ্ন করতেই পারেন। আমি উত্তর দেওয়ার জন্যও প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু ওঁদের মনোভাব অন্য রকম ছিল।’’
বাংলার পাশে বিক্রম
গত সোমবার লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনের আমন্ত্রণে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী এবং ডেপুটি হাই কমিশনার সুজিত ঘোষ। বাংলার পাশে দাঁড়িয়ে হাই কমিশনার ব্রিটেনের বণিকমহলের কাছে বিনিয়োগের বার্তা আহ্বান জানিয়েছিলেন। পরের দিন বাণিজ্য সম্মেলনেও দোরাইস্বামীর ভূমিকা, বক্তৃতা ছিল ইতিবাচক। নবান্নের সঙ্গে যখন নয়াদিল্লির ‘সংঘাত’ নিয়ে নানাবিধ আলোচনা রয়েছে, তখন লন্ডনে নয়াদিল্লির প্রতিনিধির বাংলার জন্য সওয়াল ঘরোয়া রাজনীতির প্রেক্ষিতে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই অভিমত অনেকের।
লন্ডনে হন্টন
যে ক’দিন লন্ডনে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, রোজই দুপুরে হাঁটতে বেরোতেন। শুধু হাঁটেননি। দৌড়েওছেন মমতা। কখনও আবার পিছন দিক করে হেঁটেছেন। গত বুধবার লন্ডনে মমতার হন্টনের সঙ্গী হয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। আবার বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী যখন অক্সফোর্ডের রাস্তায় হাঁটছিলেন, তখন মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন সৌরভ। শুক্রবার লন্ডনের রাস্তায় যখন মমতা হাঁটতে বেরিয়েছিলেন তখন পথেই দেখা হয়ে গিয়েছিল সৌরভ এবং ডোনার সঙ্গে। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের কন্যা সানাও।
খেলা হবে
মমতার বিলেত সফরে হাই কমিশনের কর্মসূচি থেকে বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ— বারংবার উঠে এসেছে ব্রিটেন এবং বাংলার ফুটবল ঐতিহ্যের কথা। বাণিজ্য সম্মেলনের দিনেই ইংলিশ ফুটবল ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার সিটির সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করেছে টেকনো গ্রুপ। টেকনোর পক্ষে মউ সই করেন সংস্থার কর্ণধার সত্যম রায়চৌধুরীর পুত্র দেবদূত রায়চৌধুরী। সব ঠিকঠাক থাকলে টেকনোর সঙ্গে জোট বেঁধে বাংলায় ফুটবলার তৈরির স্কুল গড়বে ম্যানসিটি। অতএব খেলা হবে।
উড়ান উত্থাপন
অনেক দিন ধরেই মমতা চাইছেন, কলকাতা থেকে লন্ডন সরাসরি উড়ান পরিষেবা ফের চালু হোক। হিথরো বিপর্যয় সেই চাওয়াকে আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল। লন্ডনে পৌঁছে হাই কমিশনের অনুষ্ঠানেই উড়ান প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাই কমিশনার দোরাইস্বামীকে বলেছিলেন, ‘‘আপনি একটা উদ্যোগ নেন।’’ মমতার সে কথা নিশ্চয়ই কানে গিয়েছিল ব্রিটিশ এয়ারলাইন সংস্থার কর্ণধারের। পরের দিন মমতা বলার আগেই বাণিজ্য সম্মেলনে তিনি জানান, কলকাতা-লন্ডন সরাসরি বিমান পরিষেবা ফের চালু করার ব্যাপারে তিনি ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ়ের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁর উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘যে আগে যাবে, তাকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানাবে রাজ্য সরকার।’’