মুর্শিদাবাদে সরকারি কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
কারও প্ররোচনায় পা দিয়ে সীমান্তের ও পারে যাওয়া চলবে না। মুর্শিদাবাদে সরকারি কর্মসূচিতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে এই বলেই সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, কারও কারও লক্ষ্য হল দুই দেশের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে সরে পড়া। তাই কোনও মতেই প্ররোচনায় পা দেওয়া চলবে না। তবে সীমান্তে শান্তিরক্ষার ভার নেওয়ার জন্য তিনি সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-কেই এগিয়ে আসতে বলেছেন। এর আগে বিএসএফের দিকে আঙুল তুললেও সোমবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, সীমান্ত দেখবে বিএসএফই। পাশাপাশি, মুর্শিদাবাদে গঙ্গার ভাঙন নিয়ে কেন্দ্রকে একহাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তা রোধের জন্য ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছেন।
সোমবার মুর্শিদাবাদের লালবাগে ‘নবাব বাহাদুর ইনস্টিটিউশন’-এ ছিল সরকারি পরিষেবা প্রদানের কর্মসূচি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নবাবের পরিবারের সদস্যেরা। ওই কর্মসূচিতে জেলার মানুষের হাতে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তার পরেই সীমান্তে শান্তিরক্ষা নিয়ে সাধারণ মানুষকে বার্তা দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মুর্শিদাবাদের ও পারে বাংলার সীমান্ত রয়েছে। সেই সীমান্ত বিএসএফ দেখুক। আমাদের উপর অত্যাচার হলে আমরা দেখব।’’ তার পরেই সাধারণ মানুষকে সতর্কও করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘দয়া করে কারও প্ররোচনায় পা দিয়ে ও দিকে যাবেন না। কারণ অনেকের উদ্দেশ্য হল দাঙ্গা লাগিয়ে, দুই দেশের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে সরে পড়া। আমি চাই সীমান্তে বিএসফ দায়িত্ব নিক, যাতে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়। আমি লোকাল পুলিশকে বলব, তাঁরা যেন মাইকিং করে ফিরে আসতে বলেন।’’ আইন হাতে তুলে নিতেও বারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে বিএসএফের দিকে আঙুল তুলেছেন মমতা। ভুয়ো পাসপোর্ট চক্র, রাজ্য থেকে বেশ কয়েক জন জঙ্গি, অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়ার পরে সমালোচনার মুখে পড়েছিল রাজ্য। সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বিএসএফই রাজ্যে গুন্ডা, লোক ঢোকাচ্ছে। সরকারি ভাবে তার জবাবও দিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। জানিয়েছিল, অনিয়মের কোনও প্রশ্ন নেই। এ বার মুর্শিদাবাদে দাঁড়িয়ে মমতা জানিয়ে দিলেন, তিনি চান, সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নেবে বিএসএফ।
বিএসএফের উপর ভরসা রাখার কথা বললেও মুর্শিদাবাদে ভাঙন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেই দুষেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘এখানে দেড় হাজার হেক্টর জমি ধসে যাচ্ছে গঙ্গা-ভাগীরথীর জলে। বার বার কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখেছি। পাত্তা দিচ্ছে না। নির্বাচনের সময় হিন্দু-মুসলিম রাজনীতি করতে আসে। ভাই-বোনদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে আসে। যখন বন্যা হয় তাকিয়েও দেখে না।’’ তার পরেই গঙ্গাভাঙন রোধে মুর্শিদাবাদে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।