নিউটাউনের ইকো পার্কে আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনীতে কিরণ আদানির হাতে তাজপুরে বন্দর নির্মাণের অনুমতিপত্র তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
বিজয়া সম্মেলনীতেই তাজপুরে সমুদ্রবন্দর নির্মাণের অনুমতি দিল রাজ্য সরকার। তা-ও আবার আদানি গোষ্ঠীকে। বুধবার সন্ধ্যায় নিউটাউনের ইকো পার্কে আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনীতে আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানির পুত্র কিরণ আদানির হাতে বন্দর নির্মাণ সংক্রান্ত কাগজপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই হাজির ছিলেন রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী শশী পাঁজা। রাজ্য সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে পশ্চিমবঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর এই বিনিয়োগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
বাংলার শিল্পমহলের দাবি, তাজপুর সমুদ্রবন্দর তৈরি হলে যেমন জলপথে বাণিজ্যের পথ প্রশস্ত হবে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে, তেমনই হলদিয়া বন্দরের উপর থেকেও চাপ কমবে। সূত্রের খবর, অনুমতিপত্র হাতে পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে দ্রুত কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন কিরণ। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় আয়োজিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তাজপুরে বন্দর নির্মাণ তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। আর বুধবার ইকো পার্কে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পপতিদের সামনেই বন্দর নির্মাণে প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র তুলে দেওয়া হল আদানি গোষ্ঠীর হাতে। রাজ্যে প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শিল্পপতিদের সামনে আদানি গোষ্ঠীর হাতে অনুমতিপত্র তুলে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চাইলেন, রাজ্যে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। চাইলে অন্য শিল্পপতিরাও বিনিয়োগ করতে পারেন। রাজ্য সরকার সব ক্ষেত্রেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।’’
উল্লেখ্য, পনেরো হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি এই বন্দরের প্রাথমিক ভাবে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ করবে রাজ্য সরকার। বাংলায় প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দরের পরিকাঠামো গড়তে আরও দশ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানানো হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় পঁচিশ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি হবে নতুন এই বন্দরটি। তাজপুর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে এই বন্দরটি তৈরি হলে প্রত্যক্ষ ভাবে পঁচিশ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি রাজ্য সরকারের। ডানকুনি ও রঘুনাথপুর শিল্পনগরী থেকে এই বন্দরে যাতায়াত অতি সুবিধাজনক বলেই দাবি করা হয়েছে। চলতি বছরের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে শিল্পপতি গৌতম আদানি তাজপুর বন্দর নিয়ে তাঁর আগ্রহের কথা প্রকাশ করেছিলেন। তার পরেই রাজ্য সরকার নিশ্চিত ছিল যে, আদানি গোষ্ঠীর পশ্চিমবঙ্গে বড়সড় বিনিয়োগ করতে চলেছে। বুধবার তাতেই সরকারি সিলমোহর পড়ে গেল।