মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অগ্নিপথ নিয়ে অবশেষে প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সোমবার বিধানসভার অধিবেশনে তিনি বলেন, ‘‘অগ্নিপথ আসলে বিজেপির ক্যাডার তৈরির প্রকল্প। এরাই ভোট লুট করতে সাহায্য করবে। পার্টি অফিসে পাহারা দেবে। বিজেপি আসলে গুন্ডা তৈরি করতেই চার বছরের এই ললিপপ দিয়েছে।’’
চার বছরের জন্য চুক্তির ভিত্তিতে সেনাবাহিনীতে তরুণদের নিয়োগের নতুন প্রকল্প সম্প্রতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। যা নিয়ে দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ চলছে। রবিবার থেকে দিল্লির যন্তর মন্তরে অগ্নিপথের বিরুদ্ধে সত্যাগ্রহ শুরু করেছে বিরোধী দল কংগ্রেসও। অসুস্থ সনিয়া গাঁধী হাসপাতাল থেকে আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানিয়েছেন। এ বার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতাও বিধানসভায় কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত নীতির সমালোচনা করলেন। সোমবার বিধানসভার অধিবেশনে নুপূর শর্মার মন্তব্য থেকে শুরু করে বুলডোজার-সহ সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি বিতর্কে নিজের মতামত স্পষ্ট জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। অগ্নিপথ প্রসঙ্গ উঠতেই কেন্দ্রের প্রকল্পের সমালোচনা করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্র তরুণদের স্থায়ী চাকরি দিলে আলাদা কথা। কিন্তু অগ্নিপথ আসলে চার বছরের ললিপপ।’’ মমতার প্রশ্ন, ‘‘চার বছর পর তো এদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের অনুমোদন থাকবে। তার পর এরা কী করবে? বিজেপি কি তা হলে গুন্ডা বানাচ্ছে!’’
দেশে বিরোধী দলগুলির অন্যতম মুখ হিসেবে উঠে আসছে মমতার নাম। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী নিয়েও মমতার ডাকা বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বিরোধী দলগুলির প্রতিনিধিরা। এর মধ্যে অগ্নিপথ নিয়ে মমতার অবস্থান কী, তা নিয়ে কৌতুহল তৈরি হয়েছিল। সোমবার তাঁর অবস্থান বিধানসভাতেই স্পষ্ট করে দিলেন বাংলার শাসকদলের সর্বময় নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি তাদের নিজেদের ক্যাডার তৈরি করতে চাইছে।’’ এর আগে রাজ্যে ভোট চলাকালীন কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। সোমবারও তিনি বলেন, ‘‘এরাই বিজেপির ভোট লুট করবে। পার্টি অফিস পাহারা দেবে।’’
প্রসঙ্গত, রবিবারই বিজেপি নেতা কৈলাসবর্গীয় বলেছিলেন, অগ্নিপথে যাঁরা চাকরি পাবেন তাঁদের পরবর্তী কালে বিজেপির দফতরের রক্ষী হিসেবে নিয়োগ করা হবে। ইনদওরে বিজেপির একটি কার্যালয়ে কৈলাস বলেন, ‘‘আমাকে যদি বিজেপির অফিসে নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হয়, তবে আমি অগ্নিবীরদের অগ্রাধিকার দেব।’’ অগ্নিবীরদের নিয়ে মমতার আশঙ্কা সম্ভবত সেই মন্তব্যেরই প্রতিফলন। তবে মমতা যখন বিধানসভায় এই মন্তব্য করছেন, তখনই ত্রিপুরায় কৈলাসের অগ্নিবীর মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অগ্নিবীর নিয়ে বিজেপি নেতা যে মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়, তৃণমূলের কোনও নেতা এমন কাজ করলে তাঁকে বহিষ্কার করা হত।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ