Mamata Banerjee

নুসরতের ‘দুর্নীতি’ প্রসঙ্গে তৃণমূলের বক্তব্য কী হবে? দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে বুধবার মুখ খুলেছেন তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। পাল্টা তোপ দেগেছে বিজেপিও। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, এ বিষয়ে দল এখনই হস্তক্ষেপ করছে না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৩ ১৯:১৮
Share:

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নুসরত জাহান (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের অভিনেত্রী সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে প্রায় ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য ইডির দ্বারস্থ হয়েছেন দলের নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। খুব তাড়াতাড়ি বিজেপির পক্ষ থেকে আদালতে যাওয়া হতে পারে বলেও দলীয় সূত্রে খবর। এই পরিস্থিতিতে বসিরহাটের সাংসদের পাশে থাকবে কি তাঁর দল? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করে অভিযোগ ওঠার পর থেকেই। দল যে দূরত্ব রাখতে চাইছে তা একের পর এক নেতা বুঝিয়ে দিয়েছেন। এ বার দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী নুসরত প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না। এটা ওদের নিজেদের বিষয়, সেটা ওরা নিজেরাই বলবে।’’ তবে নুসরতের পাশে যে মমতা রইলেন না, সেটাও বলা যাবে না। কারণ, সংবাদমাধ্যম আগে থেকেই তাঁকে ‘দোষী’ বলে দেখাচ্ছে বলে নুসরত যেমন অভিযোগ তুলেছেন, তেমন কথাই বলেছেন মমতাও। সেই সঙ্গে বিজেপির দিকেও দুর্নীতির আঙুল তুলেছেন তিনি।

Advertisement

নুসরতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে বলা হয়েছে, গড়িয়াহাট রোডের একটি সংস্থায় যৌথ ডিরেক্টর পদে রয়েছেন নুসরত। ওই সংস্থা ২০১৪ সালে মোট ৪২৯ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, রাজারহাটে হিডকোর দফতরের কাছে তাঁদের প্রত্যেককে ৩ কামরার (৩ বিএইচকে) ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। তিন বছরের মধ্যে ওই ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে এসেও কেউ কোনও ফ্ল্যাট পাননি। গত সোমবার এই অভিযোগ নিয়ে ইডির দ্বারস্থ হয়েছিলেন শঙ্কুদেব। পরে এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি সরাসরি নুসরতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অর্থে সাংসদ ফ্ল্যাট কিনেছেন বলেও অভিযোগ তোলেন। শুভেন্দু বলেন, ‘‘প্রবীণ মানুষদের টাকা নিয়ে সাংসদ নিজে এক কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনে নিয়েছেন।’’ দুর্নীতির সমস্ত তথ্য তাঁর কাছে রয়েছে বলেও দাবি করেন বিরোধী দলনেতা।

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে প্রথম দিকে মুখ না-খুললেও বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করেন নুসরত। সেখানে তিনি দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। নুসরত বলেন, ‘‘যে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তাদের থেকেই ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকার ঋণ নিয়েছিলাম। সেই টাকায় বাড়ি কিনেছি। ২০১৭ সালের ৬ মে সুদ-সহ ১ কোটি ৪০ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা ফেরত দিয়েছি কোম্পানিকে। ব্যাঙ্কের নথিও আমার কাছে আছে। ৩০০ শতাংশ চ্যালেঞ্জ করতে পারি যে, আমি দুর্নীতিতে যুক্ত নই। আমি এক পয়সা নিলেও এখানে আসতাম না।’’

Advertisement

এর পরেও প্রশ্ন ওঠে, ব্যাঙ্কের পরিবর্তে নিজে যে সংস্থার ডিরেক্টর, সেখান থেকে কেন ঋণ নিলেন নুসরত? যদিও সে প্রশ্নের উত্তর দেননি সাংসদ। তবে সংবাদমাধ্যম আগে থেকেই তাঁকে ‘দোষী’ হিসাবে দেখছে বলে অভিযোগ তোলেন নুসরত। পরে মমতার বক্তব্যেও এসেছে সেই প্রসঙ্গ। একই সঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রমাণের আগেই দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া হচ্ছে। ডিরেক্টর তো অনেকেই থাকে, নুসরত যদি কোনও জায়গার ডিরেক্টর থেকেও থাকে, তা হলে ও রকম ডিরেক্টর তো অনেক আছে। ওদেরও তো (বিজেপির) কে এক জন সাংসদ আছেন, যাঁর বিরুদ্ধে ইডিতে কমপ্লেন আছে। যিনি বিদেশেও গিয়েছিলেন চিটফান্ডের মালিকের সঙ্গে। আমি নাম বলব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement