মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
কোনও অছিলায় সরকারি কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করলে তা বরদাস্ত করা হবে না, জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতা ফিরে যাওয়ার আগে তিনি শিলিগুড়ির কাছে ফুলবাড়ি থেকে রাজ্য জুড়ে ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তার কাজের সূচনা করেন। তখনই তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, তিন বছরের মধ্যে রাস্তা খারাপ হলে তার দায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাকেই নিতে হবে। সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘মানুষের কাজ মানুষ বুঝে নিন’। কোনও সমস্যা হলে ‘মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সেল’ তো বটেই, ‘দিদিকে বলো’তেও তিনি অভিযোগ জানাতে বলেন সকলকে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, রাস্তাঘাট থেকে পরিকাঠামো, নানা প্রকল্পে বিভিন্ন সময়ে কাটমানি খেয়ে ‘নিজের পছন্দের লোককে’ কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের লোকজনের বিরুদ্ধে। এ দিন হুঁশিয়ারি দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কার্যত নিজের দলের লোকজনকেই কঠোর বার্তা দিয়ে রাখলেন। একই সঙ্গে স্পষ্ট করে দিলেন, এমন অভিযোগ যদি কোনও ভাবে তাঁর কাছে এসে পৌঁছয়, তিনি তা বরদাস্ত করবেন না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি কনট্র্যাক্ট পাইনি বলে কাজটা বন্ধ করে দিলাম— এ সব হবে না। এই কাজটা কেন্দ্রীয় ভাবে আমরা করছি। এবং কয়েকটা দফতর মিলিয়ে কাজটা করছি।’’ তার পরই তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘‘আমি সবাইকে বলছি, যদি কেউ কোথাও বাধা দেয়, আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা আমাকে জানাবেন।’’ ঠিকাদার সংস্থার কাজ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
আরও পড়ুন: জঙ্গি, গরু পাচারে সরব সিদ্দিকুল্লা
তাই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রোজ রোজ তো রাস্তা করা, সারানো সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও বলে দিয়েছি, যে ঠিকাদার সংস্থা কাজ করবে তিন বছরের মধ্যে রাস্তা খারাপ হলে তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’’
আরও পড়ুন: করোনা পরীক্ষার খরচ নিয়ে
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা টাকা নিয়ে রাতে গ্রামীণ রাস্তায় বড় ট্রাককে ছেড়ে দেয়। সে প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী এর আগে পুলিশকে সতর্ক করেছিলেন। এ দিন তিনি সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসীদেরও লক্ষ্য রাখতে বলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা হবে না। যিনি করবেন, সাধারণ মানুষ জানতে পারলে সরাসরি আমাকে অভিযোগ জানাবেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ব্যবস্থা নেব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এগুলি মানুষের কাজ, মানুষকেই ভাল করে করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: উৎসবের মরসুমে রেশন দোকানে মিলবে সর্ষের তেল
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ২০১১ সালে তাঁরা ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত মোট রাস্তা ছিল ৯২,০২৩ কিলোমিটার। গত আট বছরে তা ৩,১৬,৭৩০ কিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। ২০২০-২১ বাজেটে ৫৭৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে রাস্তার কাজের জন্য। তার মধ্যে ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের জন্য ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে।