চোলাই প্রসঙ্গ তুলে ক্ষতিপূরণের দাবি

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে চোলাই মদ খেয়ে মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। তা হলে উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের পরিজনেরা কেন ক্ষতিপূরণ পাবেন না, শনিবার সেই প্রশ্ন উঠল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৪ ০২:৪১
Share:

সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। শনিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে চোলাই মদ খেয়ে মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। তা হলে উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের পরিজনেরা কেন ক্ষতিপূরণ পাবেন না, শনিবার সেই প্রশ্ন উঠল।

Advertisement

আজ নানা সময়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পরিদর্শনে যান দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এবং কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। তাঁদের সকলেরই বক্তব্য চোলাই খেয়ে মৃতরা ক্ষতিপূরণ পেলে এনসেফ্যালাইটিসে মৃতদের দোষ কোথায়?

উত্তরবঙ্গ সফরে থাকা রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বিরোধীদের এই দাবিকে আমল দিতে রাজি নন। রাতে তিনি বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যা যা প্রয়োজন, সব কিছু করছে। এই অবস্থায় ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন উঠছে কেন?” ক্ষতিপূরণ ছাড়াও বিরোধী শিবিরের তরফে দাবি তোলা হয়েছে যে, স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্ব ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রী অবিলম্বে পূর্ণ সময়ের এক জন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিয়োগ করুন। একই সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে বরখাস্তেরও দাবি উঠেছে। অনেকের বক্তব্য, হাসপাতাল সুপারকে সাসপেন্ড করলেই তো হল না, স্বাস্থ্য দফতরের আমলারা কী করছেন? তাঁরা ব্যবস্থা নিতে দেরি করলেন কেন?

Advertisement

এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ এনসেফ্যালাইটিসের রোগীদের দেখতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে যান কংগ্রেসের বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, সুনীল তিরকি, প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, দলের নেতা সুবীর ভৌমিকরা। সে সময় সুপার এবং অধ্যক্ষ স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে উত্তরকন্যায় বৈঠক করতে গিয়েছিলেন। মেডিসিন বিভাগের প্রধান তাঁদের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরিয়ে দেখান। রোগীদের পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন কংগ্রেসের বিধায়ক-নেতারা। বেলা দেড়টা নাগাদ যান দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। ওয়ার্ড ঘুরে দেখা ছাড়াও তিনি সুপারের সঙ্গে আলোচনা করেন। এর পরেই হাসপাতালে পৌঁছন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। অহলুওয়ালিয়া পরে বলেন, “আমি থাকা অবস্থাতেই হাসপাতালে দুই মন্ত্রী এসেছেন দেখে এক জনের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার আর্জি জানাই। কিন্তু প্রত্যুত্তর পাইনি। আমি চেয়েছিলাম কেন্দ্র এবং রাজ্যের সহযোগিতায় রোগ প্রতিরোধ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে।” সাংসদেরর প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী যখন উত্তরবঙ্গ সফরে ছিলেন, তখনই সংবাদমাধ্যমে এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবু তখন বিষয়টি গুরুত্ব পেল না কেন?

কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্করবাবুর অভিযোগ, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী (গৌতম দেব) এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা পরিস্থিতি জেনেও চুপ করে ছিলেন। কেন তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাননি? মুখ্যমন্ত্রীও জানার চেষ্টা করেননি। সে জন্যই এত মানুষের প্রাণ গিয়েছে।” তাঁর দাবি, অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্ব ছেড়ে একজন পূর্ণ সময়ের মন্ত্রীকে নিয়োগ করতে হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীকেও তাঁদের ‘ব্যর্থতা’র জন্য মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিরোধীদের নানা প্রশ্ন ও দাবির জবাবে বলেন, “বাম জমানায় দীর্ঘদিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল-সহ জেলাগুলিতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি। এখন অন্যের দিকে আঙুল তোলা ঠিক নয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement