সেই লিফলেট। —নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ রয়েছে। তার পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। এ বার খোদ তৃণমূলের দলীয় সভাতেই তাঁদের ডাক পড়ল সাগরে। এই ঘটনায় বিরোধীরা কমিশনে অভিযোগ জানানোর পরে অবশ্য ভলান্টিয়ারদের সেই বৈঠকে যাননি।
আজ, সাগরে নির্বাচনী জনসভা করার কথা যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই সভায় লোক জড়ো করার জন্য চেষ্টার কসুর করছেন না স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। গত ২১ মার্চ গঙ্গাসাগরের কালীবাজার পার্টি অফিসে সিভিক ভলান্টিয়ারদের বৈঠকে ডেকেছিল তৃণমূল। দলীয় প্রতীক-সহ প্রচারপত্র ছাপিয়ে সেটি বিলি করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ারদের মধ্যেও। তৃণমূলের গঙ্গাসাগর অঞ্চল নির্বাচনী স্টিয়ারিং কমিটির তরফে ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই বৈঠকের খবর চলে যায় বিরোধীদের কাছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ২০ মার্চ বামেদের পক্ষ থেকে ওই প্রচারপত্রের প্রতিলিপি-সহ নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। এরপর সিভিক ভলান্টিয়াররা যেন কোনও ভাবেই শাসক দলের বৈঠকে না যান সেই বিষয়ে সতর্ক করে থানায় নির্দেশ পাঠায় কমিশন। তৃণমূল সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট দিনে বৈঠক হলেও সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা অবশ্য আসেননি।
কিন্তু শাসক দলের বৈঠকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ সিভিক ভলান্টিয়ারদের ডাকা হল কেন? কাকদ্বীপের বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরার সাফাই, ‘‘আমরা সিভিক পুলিশদের নিয়ে কোনও রাজনীতি করছি না। ওরা কিন্তু বৈঠকে আসেনি।’’ সাগরের বাম প্রার্থী অসীম মণ্ডলের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়াররা সরাসরি প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত। তৃণমূল তাঁদের অবৈধভাবে নির্বাচনের কাজে লাগাচ্ছে। এর আগে সিভিকরা আমাদের দেওয়াল লিখনে বাধা দিয়েছে। ভোটের সময় তাঁদের আইনশৃঙ্খলার কাজে ব্যবহার না করার আবেদন জানাব কমিশনের কাছে।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, আজ সাগরের কালীবাজারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যাওয়া জন্য এলাকার প্রতিটি বুথ এলাকা থেকে অন্তত ৩০০ জন লোক নিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তৃণমূল। সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও সাদা পোশাকে সেই সভায় আনার কথা ভাবা হয়েছিল। সেই উদ্দেশ্যেই ২১ মার্চের ওই বৈঠকে তাঁদের ডাকা হয়েছিল।
কাকদ্বীপেও শাসক দল সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এখানে অবশ্য তৃণমূলের কোনও বৈঠকে তাঁদের ডাকা হয়নি। কাকদ্বীপ থানার সিভিক ভলান্টিয়ারদের সম্প্রতি জলপাই রঙের পোশাক দেওয়া হয়েছে। মাথায় থাকছে জলপাই রংয়ের ফেট্টি। বিরোধীদের অভিযোগ, এর ফলে সিভিকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের পার্থক্য করাই যাচ্ছে না। কাকদ্বীপের জোট সমর্থিত কংগ্রস প্রার্থী রফিকউদ্দিন মোল্লার অভিযোগ, ‘‘ভোটের ঠিক আগে সিভিকদের পোশাক বদল করা হল কেন? অনেকেই তাঁ দের কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ভাবছেন। বিষয়টি কমিশনে জানিয়েছি।’’
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়াররা সরাসরি কোনও দলের সঙ্গেই যুক্ত থাকতে পারেন না। তবে তাঁদের পোশাকের বিষয়টি থানাগুলিই ঠিক করে।’’
কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক রাহুল নাথ অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ না নিয়ে বলা মুশকিল।’’