‘পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চ’।—নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ-প্রশাসনকে ধাঁধায় ফেলে একই সঙ্গে শহরে জোড়া কর্মসূচি পালন করল সিটু! শেষ মুহূর্তে পুলিশের কাছ থেকে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি মিলেছিল রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে জমায়েতের। সেই মঞ্চে পার্শ্বশিক্ষকদের সমাবেশ করে সিটুর কর্মী-সমর্থকেরা পৌঁছে গেলেন স্ট্র্যান্ড রোডে নব মহাকরণ ঘেরাও করতে। শ্রম দফতর অভিযানের জন্য তিন জায়গা মিছিল করে নব মহাকরণে পৌঁছে যাওয়ার সিটুর এই পরিকল্পনার কথা আগাম ঘোষণা করা হয়নি। ঘটনাস্থলে বাধা না দিলেও ‘বেআইনি জমায়েতে’র দায়ে সিটু নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার কথা ভাবছে পুলিশ।
সিটু নেতারা ঘোষণা করেছিলেন, রানি রাসমণির জমায়েত থেকে তাঁদের প্রতিনিধিদল নব মহাকরণে যাবেন দাবি জানাতে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রানি রাসমণিতে মঞ্চ বেঁধে সভা হয় ‘পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চে’র। চুক্তির ভিত্তিতে কর্মরত পার্শ্বশিক্ষকদের নিয়ে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুই কাজ করে, শিক্ষক সংগঠন নয়। পার্শ্বশিক্ষকদের মঞ্চে এ দিন যখন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা, ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র সভাপতি প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তীরা রয়েছেন, সিটুর কর্মী-সমর্থকেরা তখন তিন দিক থেকে মিছিল নিয়ে পৌঁছে যান নব মহাকরণের সামনে। সেখানে ম্যাটাডোর-মঞ্চ থেকে ঠিকা ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সরব হন সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু, রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায়েরা।
পুলিশের অনুরোধে স্ট্র্যান্ড রোডের এক দিকের পথ ছেড়ে দেন সিটুর কর্মী-সমর্থকেরা। পরে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক সিটু নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।
স্ট্র্যান্ড রোডে নব মহাকরণের সামনে পুলিশ মোতায়েন।—নিজস্ব চিত্র।
রানি রাসমণির সভায় বিরোধী দলনেতা মান্নান বলেন, ‘‘এমএসকে-এসএসকে হোক, মাদ্রাসা শিক্ষক বা পার্শ্বশিক্ষক, পিআরটি-র দাবি নিয়ে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষক— সকলের উপরেই আক্রমণ নামিয়ে আনছে রাজ্য সরকার। গণতান্ত্রিক সব অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিরোধী নেত্রী থাকার সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা দাবি করেছিলেন, সেই কথাই বলছেন পার্শ্বশিক্ষকেরা। তাঁর ঘোষণা ছিল, ক্ষমতায় আসার তিন মাসের মধ্যে পার্শ্বশিক্ষকদের স্থায়ী করা হবে। তা হলে এখন তাঁরা কী অন্যায় দাবি করছেন?’’