Blast

বিস্ফোরণস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু সিআইডি-র, অসুস্থ জাকিরকে দেখতে এসএসকেএমে মমতা

ঘটনাস্থলে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে বিস্ফোরণের বহু চিহ্ন। তা পরীক্ষা করেন সিআইডি আধিকারিকরা। রেললাইনে নেমেও তাঁরা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:৫৬
Share:

ঘটনাস্থলে সিআইডি। নিজস্ব চিত্র

রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর হামলার ঘটনার তদন্ত শুরু করল সিআইডি। বৃহস্পতিবার সকালেই মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশন চত্বরে যায় সিআইডি-র তদন্তকারী দল। তাঁরা ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন। ঘটনাস্থলে যাচ্ছে ফরেনসিক দলও। বুধবার রাতেই কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল বোমা হামলায় আহত মন্ত্রীকে। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে তাঁকে রাখা হয়েছে। শরীরে বোমার আঘাত রয়েছে। চিকিৎসার জন্য গঠন করা হবে মেডিক্যাল টিম। তারপর অস্ত্রোপচার নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঘটনায় আহত আরও ৪ জনকে আনা হয়েছে এসএসকেএম-এ। গোটা পরিস্থিতির তদারকি করছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দেখা করে গিয়েছেন ত্বহা সিদ্দিকীও। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ জাকিরকে দেখতে এসএসকেএমে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাকিরের চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল টিমের প্রধানের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালেই নিমতিতা স্টেশনে পৌঁছন সিআইডি আধিকারিকরা। তাঁরা স্টেশন চত্বর পরিদর্শন করেন। বিশেষ করে স্টেশনের যে অংশে বিস্ফোরণ ঘটেছিল সেই এলাকা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। বুধবার রাতে প্ল্যাটফর্মে কী ভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছিল তার আঁচ পাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে বিস্ফোরণের বহু চিহ্ন। তা পরীক্ষা করেন সিআইডি আধিকারিকরা। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের রেললাইনে নেমেও তাঁরা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান। বিষয়টি নিয়ে জঙ্গিপুর পুলিশের সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছেন তাঁরা। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা। বিস্ফোরণের মাত্রা কতটা ছিল তা পরীক্ষা করতে ঘটনাস্থলে গিয়েছে ফরেনসিক দলও। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করবেন তাঁরাও।

বুধবারের ওই বিস্ফোরণে জখম হন ইজাদ হোসেন নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইজাদ। তিনি বলছেন, ‘‘বুধবার রাতে নিমতিতা স্টেশনে জাকির হোসেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দলীয় কর্মীরা। জাকির তাঁর বিড়ি কারখানা থেকে নিমতিতা স্টেশনে পৌঁছন। স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি ব্যাগ রাখা ছিল। জাকির হোসেনের সঙ্গে যাওয়ার সময় সেই ব্যাগ সরাতে গিয়ে এই বিস্ফোরণ ঘটে। আমরা সকলেই কমবেশি জখম হয়েছি। মন্ত্রী নিজেও গুরুতর জখম হন।’’

Advertisement

বুধবার রাতে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন জাকির। নিমতিতা স্টেশন থেকে তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু স্টেশনে আচমকাই বিস্ফোরণ ঘটে। তার জেরে জাকির-সহ মোট ১৪ জন জখম হন। জাকির-সহ কয়েকজনকে ওই দিন রাতেই কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশ সূত্রে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়, জাকিরের উপর হামলা হয়েছে। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের একটি অংশ ভিন্ন কথা বলছেন। যার জেরে কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ফলে বিস্ফোরণ কাণ্ডে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ও তদন্তকারীদের কাছে গুরুত্ব পূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।স্টেশনে ব্যাগের মধ্যে বোমা মজুত করে রাখা ছিল কিনা, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মে বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। বিষয়টি নিয়ে পৃথক ভাবে তদন্ত শুরু করেছে রেল-ও।

বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে রঘুনাথগঞ্জের ওমরপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন জাকির হোসেনের অনুগামীরা। ঘটনার জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement