ফাইল চিত্র।
নিয়োগের পরীক্ষা দিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু কল্যাণীর এমস হাসপাতালে নিয়োগের জন্য নেওয়া সেই পরীক্ষার ফল কবে বেরোল এবং চূড়ান্ত তালিকা কী ভাবে তৈরি হয়েছে, অনেকেই তা জানেন না বলে জানাচ্ছেন সিআইডি-র তদন্তকারীরা। সিআইডি-র খবর, পিএসইউ সংস্থার মাধ্যমে ওই এমসে যে দু’শো জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে অর্ধেক প্রার্থীর নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তকারীরা ওই হাসপাতালে কর্মরত অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা বলেছেন চাকরি না-পাওয়া বেশ কিছু প্রার্থীর সঙ্গে, যাঁরা আবেদন করেও অনিয়মের জেরে চাকরি পাননি বলে অভিযোগ।
এই ঘটনায় বিজেপির বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার, নদিয়ার রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার এবং দুই বিধায়ক, বাঁকুড়ার নীলাদ্রিশেখর দানা ও নদিয়ার চাকদহের বঙ্কিম ঘোষ-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তের তালিকায় আছেন নীলাদ্রিবাবুর মেয়ে মৈত্রী দানা, বঙ্কিমবাবুর বৌমা অনসূয়া ঘোষ, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য দীপা বিশ্বাস এবং কল্যাণী এমসের কার্যনির্বাহী অধিকর্তা রামজি সিংহ। অনসূয়াদেবী ও মৈত্রীদেবী এমসে কাজ পেয়েছেন। অবৈধ ভাবে তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁর দলেরই এক পুরনো কর্মী।
গত ২০মে সরিফুল ইসলাম নামে মুর্শিদাবাদের এক বাসিন্দা এবং এমসের চাকরিপ্রার্থী অভিযোগ দায়ের করেন কল্যাণী থানায়। তাঁর দাবি, ওই সাত জন নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে কল্যাণীর এমসের বিভিন্ন পদে নিজের পরিজন ও পরিচিতদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। ১ জুন ওই ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি।
সিআইডি সূত্রের খবর, কয়েক দিন ধরে গোয়েন্দারা সেখানে কর্মরত লোকজন এবং কিছু চাকরিপ্রার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। শুক্রবার অনসূয়াদেবীকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিলেন সিআইডি-র তদন্তকারীরা। কিন্তু পূর্বনির্ধারিত কাজ থাকায় এ দিন তিনি তদন্তকারীদের সামনে হাজির হতে পারবেন না বলে ই-মেল করে জানান ওই মহিলা। সিআইডি তাঁকে বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। এ দিন দুপুরে বঙ্কিমবাবুর হরিণঘাটার বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বার বার ফোন করা সত্ত্বেও তিনি ফোন ধরেননি।
আগামী সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে মৈত্রী দেবীকে। তাঁর বাড়িতে গিয়ে কথা বলতে চান তদন্তকারীরা। ঈশিতা জানা পাল নামে হরিণঘাটা পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক মহিলাকে এ দিন হরিণঘাটায় এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডি-র তিন প্রতিনিধি। ঈশিতাদেবী মার্চে এমসে কাজ পান ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, প্রাথমিক ভাবে অনিয়মের প্রচুর প্রমাণ মিলেছে। প্রথমে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নথিপত্র জোগাড় করা হচ্ছে। সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে ডেকে পাঠানো হবে ওই সংস্থার আধিকারিকদের। কারণ, বিভিন্ন নথিতে ওই সংস্থার দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা।