ফাইল চিত্র।
প্রেমের ফাঁদে পড়ে পাচার হওয়া এক নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে সিআইডি। বৃহস্পতিবার বিকেলে গুজরাতের রাজকোট থেকে বছর চোদ্দোর ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। সিআইডি সূত্রের খবর, ওই ঘটনায় শেখ তাহিদুর রহমান নামে হুগলির আরামবাগের এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতকে শুক্রবার রাজকোটের স্থানীয় আদালতে তোলা হয়েছে। তাঁকে ট্রানজ়িট রিমান্ডে রাজ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে। নাবালিকাকে রাজকোটের শিশুকল্যাণ সমিতিতে পেশ করা হয়েছে। তাহিদুরের বিরুদ্ধে এর আগেও পাচারের অভিযোগ মিলেছিল বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।
গোয়েন্দারা জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানা এলাকার বাসিন্দা এক ব্যক্তি গত ১০ অক্টোবর পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর নাবালিকা মেয়ে টিউশন পড়তে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। ঘটনার পর থেকে তার মোবাইল ফোন অফ রয়েছে। স্থানীয় থানায় ওই নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করা হলেও ঘটনার তদন্তভার নেই সিআইডির মানব পাচার দমন শাখা।
ভবানী ভবন সূত্রের খবর, নবম শ্ৰেণির ওই ছাত্রী টিউশনিতে যাওয়ার কথা বললেও পড়তে যায়নি। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মেয়েটি বাড়ি থেকে বেরিয়ে বারুইপুরে গিয়েছিল। বারুইপুরের পরেই তার মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সেখান থেকে সে কোথায় গিয়েছে তা জানা সম্ভব ছিল না। ট্রেন বন্ধ থাকায় বাস স্ট্যান্ড বা অটো স্ট্যান্ডে খোঁজ নিলেও পুলিশ কিছু জানতে পারেনি। কিন্তু মোবাইলের কল ডিটেলস খতিয়ে দেখতে গিয়ে জানা যায়, নিখোঁজ হওয়ার আগে পর্যন্ত একটি নম্বরে বহু বার কথা বলেছে মেয়েটি। তার নিখোঁজ হওয়ার দিন থেকে সেই নম্বরটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সিআইডি জানায়, ওই নম্বর সম্পর্কে খোঁজ করতে গিয়ে জানা যায়, সেটির মালিক তাহিদুর। অন্যান্য সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, রাজকোটে বাড়ি ভাড়া নিয়ে তাহিদুর রয়েছে। সিআইডির একটি দল বৃহস্পতিবার সেখানে হানা দিয়ে তাহিদুরকে পাকড়াও করে এবং মেয়েটিকে উদ্ধার করে।
গোয়েন্দারা জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে মেয়েটি ও ধৃতের আলাপ হয়েছিল। তাহিদুর বিবাহিত হলেও সেই পরিচয় মেয়েটিকে জানায়নি। প্রেমের ফাঁদ পেতে পাচার করার উদ্দেশ্যেই সে মেয়েটিকে রাজকোটে নিয়ে গিয়েছিল। ওই এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজও করে তাহিদুর। কিন্তু তার আগেই গোয়েন্দা হানায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে।