CID

দেবাশিসকে তলবের ইঙ্গিত গোয়েন্দাদের

শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনার পরে দেবাশিসের (তখন তিনি ছিলেন ওই এলাকার পুলিশ সুপার) সম্পত্তির বিভিন্ন নথি সংগ্রহের কাজ শুরু করেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৪৮
Share:

প্রাক্তন আইপিএস অফিসার দেবাশিষ ধর। ছবি সংগৃহীত।

দীর্ঘ তদন্ত চালিয়েই হাতে পর্যাপ্ত তথ্য নিয়ে তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিআইডি-র দল। আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন সম্পত্তির মামলায় আইপিএস অফিসার দেবাশিস ধরের বিরুদ্ধে এ বার কঠোর অবস্থান নিতে পারে রাজ্য পুলিশ। সিআইডি-র তরফে এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে। সিআইডি-র এক কর্তা জানান, তল্লাশিতে আটক করা নথি খতিয়ে দেখার পরে প্রয়োজনে আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন সম্পত্তির মামলায় ভবানী ভবনেও ডাকা হতে পারে তাঁকে।

Advertisement

ভবানী ভবন সূত্রের খবর, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সিআইডি-র তদন্তকারীদের স্ক্যানারে ছিলেন ওই আইপিএস অফিসার। বিশেষ করে বিধানসভার ভোটে কোচবিহারের শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনার পরে দেবাশিসের (তখন তিনি ছিলেন ওই এলাকার পুলিশ সুপার) সম্পত্তির বিভিন্ন নথি সংগ্রহের কাজ শুরু করেন তদন্তকারীরা। তা থেকেই জানা গিয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে কয়েকশো গুণ সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে ওই অফিসারের। সম্প্রতি সেই সংক্রান্ত প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়েছে সিআইডি-র শীর্ষ কর্তাদের কাছে। সিআইডি তদন্তে জেনেছে, ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায়চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে দেবাশিসের। কর্তাদের নির্দেশে রবিবার একযোগে ওই দু’জনের পাঁচটি আস্তানায় তল্লাশি চালানো হয়। তার আগে ব্যারাকপুর থানায় ওই দু’জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলাও করা হয়েছে।

সিআইডি যে বহু দিন ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে, দেবাশিস সেই বিষয়ে ওয়াকিবহাল। সোমবার ওই আইপিএস অফিসার জানান, তিনি সরকারি কর্মচারী। সব নথি আগেই দেওয়া হয়েছে সিআইডি-কে। সব রকম সহযোগিতা করেছেন তিনি। সম্পত্তি সংক্রান্ত যা যা তথ্য চাওয়া হয়েছে, সবই দেখিয়েছেন। তাঁর সম্পত্তির বৃদ্ধির বিষয়ে সিআইডি-র তরফে যা বলা হয়েছে, সেই বিষয়ে দেবাশিস বলেন, “যিনি হিসাব করেছেন, তিনিই বলতে পারবেন।’’ ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ প্রসঙ্গে দেবাশিস বলেন, “সুদীপ্ত এক জন ব্যবসায়ী। আমি চাকুরিজীবী। আমরা আলাদা মানুষ। ওঁর সঙ্গে অন্য পুলিশেরও পরিচয় আছে।’’

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, রবিবার ওই আইপিএস অফিসারের বাড়ি থেকে প্রচুর নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। একই সঙ্গে সুদীপ্তের মেট্রোপলিটনের বাড়ি থেকে গয়না, নথি এবং তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়। সিল করে দেওয়া হয়েছে তাঁর কসবার রাজডাঙার বাড়ি। এক সিআইডি-কর্তা জানান, ওই বাড়িতে আজ, মঙ্গলবার আবার তল্লাশি চালানো হবে। অন্য বাড়ি থেকে প্রচুর নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কাদের মদতে, কী উপায়ে তাঁরা অতি দ্রুত সম্পত্তি বৃদ্ধি করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দেবাশিস বর্তমানে ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’ বা বাধ্যতামূলক প্রতীক্ষায় আছেন। শীতলখুচিতে গুলি চালানোর ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সিআইডি। সেই মামলায় গোয়েন্দারা একাধিক বার প্রশ্ন করেছেন তাঁকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement