CID

Arrest: সোনা ডাকাতির সর্দার শ্রীঘরে

গত রবিবার স্বর্ণ-ঋণ সংস্থায় ডাকাতি চক্রের সেই পান্ডা ও রিসিভারকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ধৃতের নাম অমরেন্দ্র সিংহ ওরফে অমর পালোয়ান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি

উপর থেকে দেখলে তার কৃষকের নিরীহ ভূমিকাটাই নজরে পড়ে। কিন্তু সেটা যে তার মুখোশ, তা জেনে তাজ্জব বনে গিয়েছেন গোয়েন্দারা। খেতিবাড়ির আড়ালে সে দুর্ধর্ষ ডাকাত বলে জানাচ্ছে সিআইডি। কবে কোথায় ডাকাতি হবে এবং ডাকাতির মাল কোথায় জমা পড়বে— সব কিছুর নকশা তৈরি করত সে এবং সেই অনুযায়ী নির্দেশ দিত শাগরেদদের। গত রবিবার স্বর্ণ-ঋণ সংস্থায় ডাকাতি চক্রের সেই পান্ডা ও রিসিভারকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ধৃতের নাম অমরেন্দ্র সিংহ ওরফে অমর পালোয়ান। বিহার পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সাহায্য নিয়ে নালন্দা জেলার রাজগির বাসস্ট্যান্ডে তাকে পাকড়াও করা হয়।

Advertisement

ধৃতকে সোমবার আসানসোল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সে-রাতেই তাকে কলকাতায় আনা হয়। তার কাছে নগদ দু’লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে।

পুলিশি সূত্রের খবর, গত ১১ সেপ্টেম্বর মাস্ক পরা চার দুষ্কৃতী আসানসোলের একটি স্বর্ণ-ঋণ সংস্থায় ঢুকে কর্মীদের মেরেধরে প্রায় আট কোটি টাকার সোনা লুট করে চম্পট দেয়। ওই চার জনের মধ্যে ছিল গুড্ডু কুমার ওরফে ধর্মেন্দ্র এবং বিট্টু কুমার ওরফে ছোটু। বিট্টুর বাড়ি বিহারের বেউর জেলায়। গুড্ডু থাকে বিহারের শেখপুরায়। সেই ঘটনার ১০ দিন পরে ডাকাতি হয় হুগলির চুঁচুড়ার স্বর্ণ-ঋণ সংস্থার অফিসে। সেখান থেকে পুলিশ তিন জনকে পাকড়াও করে। তাদের মধ্যেও ছিল গুড্ডু ও বিট্টু।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, জেরার মুখে ওই দু’জন বলে, আসানসোল থেকে ডাকাতির সোনা নিয়ে তারা রাজগির ফিরে গিয়ে অমরের হাতে তুলে দেয়। মাত্র ১০ কেজি সোনা লুট হয়েছে দেখে তা নিতে অস্বীকার করে অমর। জানায়, এত কম সোনা সে নাকি নেয় না। সে গুড্ডু-বিট্টুদের চুঁচুড়া-সহ বিভিন্ন জায়গার স্বর্ণ-ঋণ সংস্থায় ডাকাতি করার নির্দেশ দেয়। যাতে সব মিলিয়ে ২০-৩০ কেজি সোনা পাওয়া যায়। অমরের নির্দেশেই গুড্ডুরা চুঁচুড়ায় ডাকাতির ছক কষে।

সিআইডি সুত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলে ডাকাতির আগে অমর বিট্টু ও গুড্ডুকে নিয়ে ঝাড়খণ্ডের নিরশা সংলগ্ন গোবিন্দপুর এলাকায় ভাড়ার ঘরে বসবাস করছিল। সেখানে বসেই আসানসোলে ডাকাতির ‘ব্লু প্রিন্ট’ বা নীল নকশা তৈরি করে সে। ৯ সেপ্টেম্বর আসানসোলের একটি হোটেলে ঘর ভাড়া নিয়ে তারা সেখানে ওঠে এবং এলাকায় ঘুরে ঘুরে ‘রেকি’ করে অর্থাৎ কবে কোথায় কী ভাবে ডাকাতি করা যাবে, ঘুরে ঘুরে সেটা দেখে নেয়। শেষে সুযোগ বুঝে ডাকাতি করে ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, চাষ-আবাদ দেখভালের পাশাপাশি এলাকার উঠতি যুবকদের নিয়ন্ত্রণ করত অমর। সে চোরাই সোনা কিনে নিত এবং কোথায় কোথায় স্বর্ণ-ঋণ সংস্থা রয়েছে, তা চিহ্নিত করে সেখানে হানা দেওয়ার নির্দেশও দিত।

সিআইডি সূত্রের খবর, বিহারের এই ডাকাতদলটি গোটা দেশেই দুষ্কর্ম করে বেড়ায়। কখনও স্বর্ণ-ঋণ সংস্থার অফিসে হামলা, কখনও ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ। এর আগে বর্ধমান ও শিলিগুড়িতে দু’টি স্বর্ণ-ঋণ সংস্থায় ডাকাতির ঘটনায় চেন্নাই থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement