চিটফান্ড-কাণ্ডে বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি। — ফাইল চিত্র।
সানমার্গ চিটফান্ড-কাণ্ডের তদন্তে এ বার বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বাড়িতে তল্লাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-এর। সিবিআইয়ের তল্লাশি সুবোধের ভাই তথা কাঁচরাপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান কমল অধিকারীর বাড়িতেও। সুবোধ এবং কমল দু’জনেই হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানির ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত। রাজুকে আগেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই।
রবিবার সকালে সিবিআই আধিকারিকরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে হালিশহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। হালিশহর স্টেশন রোডে ‘মঙ্গলদীপ ভবন’ নামে বাড়ি রয়েছে বীজপুরের বিধায়ক সুবোধের। সেখানে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। সুবোধের ভাই কমলের বাড়িতেও যায় সিবিআইয়ের দল। পাশাপাশি আরও কয়েক জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। চিটফান্ড-কাণ্ডে টাকার উৎস খুঁজতেই সিবিআইয়ের এই অভিযান বলে মনে করা হচ্ছে। সুবোধ-যোগে পাইকপাড়া, দক্ষিণদাঁড়ি এবং বিটি রোডের তিনটি আবাসনের ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চালান সিবিআই আধিকারিকরা।
সুবোধ অধিকারীর বাড়িতে সিবিআই দল। — নিজস্ব চিত্র।
সিবিআই অভিযান নিয়ে কাঁচরাপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান কমলের বক্তব্য, ‘‘শেষ পর্যন্ত প্রমাণ, কাগজপত্র ইত্যাদি কথা বলে। কারও সঙ্গে কারও ভাল সম্পর্ক থাকতেই পারে। সিবিআই সিবিআইয়ের কাজ করছে। সেটা নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। কেউ কোনও কিছুতে জড়িত থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়। যেখানে কোনও যোগসাজশ নেই সেখানে কী ব্যবস্থা নেবে? যা ঘটেছে তা খুবই নিন্দনীয়। রাজু সহানি আমার ভাল বন্ধু। সিবিআই সিবিআইয়ের কাজ করতেই পারে। যদি কোনও সহযোগিতা প্রয়োজন হয় অবশ্যই করব। তবে অনেকে অভিযোগ করছেন আমাদের সম্পত্তি নিয়ে। তা সর্বৈব মিথ্যা। আমাদের কাছে সমস্ত কাগজপত্র আছে।’’
সুবোধ এবং তাঁর ভাই কমলের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি নিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘সিবিআই সিবিআইয়ের কাজ করছে। আমরা আমাদের কাজ করব। সিবিআই এখনও পর্যন্ত কিছু প্রমাণ করেনি। এখানে ওখানে তল্লাশি করছে। একে-তাকে গ্রেফতার করছে। পরে প্রমাণ হবে কে দোষী না দোষী। বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকারে থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিবিআই-ইডিকে ব্যবহার করছে। যে দোষ করেছে সে শাস্তি পাবে। যে দোষ করেনি সে মুক্ত হবে। মানুষ আমাদের সঙ্গেই থাকবে।’’
শুক্রবার রাজুকে গ্রেফতার করে সিবিআই। শনিবার দুপুরে রাজুকে আসানসোলের জেলা আদালতের সিজিএম তরুণকান্তি মণ্ডলের এজলাসে পেশ করা হয়। তদন্তের স্বার্থে তৃণমূল নেতাকে সাত দিনের হেফাজতে নিতে আদালতের কাছে আবেদন করে সিবিআই। তবে দু’পক্ষের আইনজীবী সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক রাজুর জামিন নাকচ করে দেন। তাঁকে পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর রাজুকে আবার আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন বিচারক। তল্লাশির সময় রাজুর থেকে ৮০ লক্ষ টাকা এবং একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।