পাঁচ বছরের সুশ্রুত সমানে জল খাচ্ছিল। শৌচাগারেও যাচ্ছিল ঘন ঘন। গত বুধবার তাকে কলকাতায় এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেখা যায়, বহরমপুরের শিশুটির রক্তে শর্করার পরিমাণ ৭৬০! মঙ্গলবার মা শ্রুতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শনিবার ওকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভাল আছে। শর্করা কমে ১৬২। ইনসুলিন দিয়ে যেতে হবে।’’
কলকাতার ব্যবসায়ী ধরমবীর শর্মার ১৪ বছরের ছেলে হিমাংশুর আড়াই বছর আগে জ্বর হয়েছিল। ওজন কমছিল দ্রুত। দার ক্ষেত্রেও দেখা গেল, রক্তে শর্করার পরিমাণ ৬৬৬। তখন থেকে লাগাতার ইনসুলিন চলছে।
মঙ্গলবার শিশু দিবসে এই পরিবারগুলিকে এক জায়গায় করেছিল অ্যাপোলো হাসপাতাল। চিকিৎসক সুব্রত দে জানিয়েছেন, ‘‘১৯৯৪ সালে বিশ্বে প্রথম শিশুদের এই ডায়াবিটিস ধরা পড়ে। এই ‘টাইপ ওয়ান’ ডায়াবিটিস এখন শিশুদের হামেশাই হচ্ছে।’’ এই ধরনের ডায়াবিটিস-এ রক্তে ইনসুলিন তৈরি করার ক্ষমতা থাকে না। বাইরে থেকে ইনসুলিন দিতে হয়। তিনি জানান, ‘ইনসুলিন পাম্প’ বলে একটি মেশিন আছে, যা ব্যবহার করলে তা প্রয়োজন মেপে শিশুর শরীরে ইনসুলিন দেবে।
হিমাংশু ওই যন্ত্র ব্যবহার করছে। পকেটে যন্ত্র নিয়েই ক্রিকেট, ফুটবল খেলে বেড়ায় সে। খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। সেই সব মেনে চলতে হয়। প্রতি দিনই বাড়িতে মেপে নিতে হয় রক্তে শর্করার পরিমাণ। ইনসুলিন পাম্পের বাজারদর ১ লক্ষ ৬০ হাজার থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। অনেকের পক্ষে তা কেনা সম্ভব নয়। তার উপরে প্রতি ৬-৭ বছর অন্তর বদলে ফেলতে হয় যন্ত্র। নিয়ম করে মেপে ইনসুলিনই তাঁদের কাছে একমাত্র ভরসা।