শিশু চুরি চক্রের হাত কোচবিহার পর্যন্ত বিস্তৃত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।
শনিবার কোচবিহার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি মহিষবাথান এলাকার দুই প্রতিবেশী বধূর কাছ থেকে দু’টি শিশুকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার রাতে ওই দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিক ভাবে বেশ কিছু তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। তাতেই ঘটনার নেপথ্যে কলকাতার যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা উঠে এসেছে।
পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে এক চিকিৎসকের নাম জানা গিয়েছে। স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ওই চিকিৎসক কয়েক বছর আগে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। চার বছর আগে কোচবিহারে চলে আসেন। শহর লাগোয়া রাজেন তেপথী এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্র্যাকটিশ করতেন। তাঁর সঙ্গে ধৃত মহিলাদের এক জন শিউলি দাসের সম্পর্ক ছিল বলেও মনে করা হচ্ছে। শিউলির বাড়ি কোচবিহারের চকচকা এলাকায়। ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কোনও নার্সিংহোমের যোগাযোগ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ওই চিকিৎসক বেপাত্তা। তাতে সন্দেহ বেড়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল জানান, পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দুই মহিলাকেই বুধবার কোচবিহারের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হয়। বিচারক সেলিম আনসারি ধৃতদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার কোচবিহার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি মহিষবাথান এলাকার দুই প্রতিবেশী গৃহবধূর কাছ থেকে শিশু দুটিকে উদ্ধার করে। সেদিনই তাদের বাণেশ্বরের একটি হোমে পাঠান হয়। মঙ্গলবার ওই ব্যাপারে কমিটির তরফে কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানান হয়।
ধৃতদের আর এক জন স্বাতী আচার্যের দাবি, “ওই চিকিৎসক ও শিউলি আমার বাড়িতে শিশু দিয়ে এসেছিল। অসুস্থ শিশুকে নার্সিংহোমে রেখে চিকিৎসা করিয়েছি।” অভিযুক্তদের আইনজীবী শিবেন রায় বলেন, “ধৃত দু’জনই নিরপরাধ। তাঁদের গ্রেফতার করে আসল রাঘব বোয়ালদের আড়াল করা হচ্ছে।’’ ওই চিকিৎসকের মোবাইল বন্ধ। স্থানীয় এক জন বলেন, মাঝেমধ্যেই রোগী ও রোগীর পরিজনেরা আসতেন। ভিড়ও হতো। কিন্তু এমন ঘটনায় তাঁর নাম জড়াবে তা তাঁরা ভাবতে পারেননি।