দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্ন রওনা হওয়ার আগে পৌনে ১২টা নাগাদ ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান তিনি। কলকাতা পুরসভা পরিচালিত ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোভিড টিকাকরণের কাজ চলছে। টিকাকরণ কেন্দ্রে ঢুকে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, সেখানে টিকাকরণ কী ভাবে চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দেন ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর রতন মালাকার।
রতন মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, প্রতিদিন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৫০ জনকে টিকা দেওয়ার কাজ হচ্ছে। মিনিট পাঁচেক সেখানে টিকাকরণের কাজ দেখে নবান্নে রওনা হয়ে যান মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর পরিদর্শন প্রসঙ্গে ওয়ার্ড কো-অডিনেটর রতন পরে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী ওয়ার্ডের টিকাকরণের কাজ দেখে সন্তুষ্ট। টিকাকরণ থেকে এলাকার কোনও মানুষ যাতে বাদ না পড়েন, সে বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।" তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, ভবানীপুর বিধানসভা থেকে উপনির্বাচন লড়ছেন মমতা। যে ভোট নিয়ে ইতিমধ্যেই শাসক-বিরোধী লড়াই বেধেছে। মমতা দ্রুত উপনির্বাচন চাইলেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, উপনির্বাচন করার আগে কোভিড সংক্রমণ রোখার দিকে নজর দেওয়া হোক। তাঁর কথায়, ‘‘কোভিড সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়ে যখন লোকাল ট্রেন চালানো হচ্ছে না, তখন উপনির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়ো কেন!’’
প্রসঙ্গত, মমতা মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন গত ৫ মে। ফলে তাঁকে আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে বিধানসভায় নির্বাচিত হতে হবে। বস্তুত, একই নিয়ম প্রযোজ্য কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও। কিন্তু উপনির্বাচন করানোর সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের। ফলে তারা কবে উপনির্বাচন করাবে, তা একান্ত ভাবেই তাদের উপর নির্ভরশীল। মমতা ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে প্রকাশ্যে আবেদন জানিয়েছেন উপনির্বাচন করানোর জন্য। সম্প্রতি ভবানীপুর-সহ রাজ্যের সাতটি কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য নির্বাচন দফতর। গত সপ্তাহে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেছিলেন, ‘'আমি ভবানীপুর নিয়ে কলকাতা পুরসভার একটা রিপোর্ট দেখছিলাম। অনেক ওয়ার্ডই কোভিডশূন্য। জিকো-জিরো-জিরো!’’
মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট, তিনি ভবানীপুরে-সহ রাজ্যের সাতটি কেন্দ্রে দ্রুত উপনির্বাচন চাইছেন। সোমবার ভবানীপুরে টিকারণের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে যাওয়াও তারই অঙ্গ বলে মনে করছে তৃণমূলের অন্দরের একাংশ। প্রসঙ্গত, মমতা উপনির্বাচন নিয়ে আরও বলেছিলেন, ‘'ওরা (কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন) রাজ্যসভা ভোট করানো যাবে কি না, জানতে চেয়েছিল। আমরা ওদের বলেছিলাম, রাজ্যসভা তো বটেই, বিধানসভা ভোটের জন্যও আমরা তৈরি। উপনির্বাচন তো হবে একেকটা বিচ্ছিন্ন এলাকায়। তা ছাড়া গোটা রাজ্যেই করোনা এখন অনেকটা কমে এসেছে। বিজেপি সব’কটা আসনে হারবে। তাই উপনির্বাচন করাতে চাইছে না।’’