মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
র্যাগিং আটকাতে এ বার টোল ফ্রি নম্বর চালু করল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে ওই নম্বরের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘লালবাজারে সারা রাজ্যের জন্য একটি টোল ফ্রি নম্বর করা হচ্ছে। নম্বরটি হল— ১৮০০৩৪৫৫৬৭৮। এটা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।’’ যাদবপুরকাণ্ডের প্রেক্ষিতে এই নম্বর চালু করা হল বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘যাদবপুর আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। অনেক দিন এটা (র্যাগিং) বন্ধ ছিল। হয়তো অনেক ঘটনাই ঘটে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে জানায় না। অন্ধ্রপ্রদেশেও একটি ঘটনা ঘটেছে। আমি সিআইডি-র হাতে সেটার দায়িত্ব দিয়েছি। তারা তদন্ত শুরু করে দিয়েছে।’’
এর আগে একাধিক বার যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ওই ঘটনার সমালোচনায় যাদবপুরকে তিনি ‘আতঙ্কপুর’ বলে বর্ণনা করেছেন। সোমবার নেতাজি ইন্ডোরের একটি সভা থেকে ওই ঘটনার দায় সিপিএমের উপরে চাপিয়েছেন। যদিও তাঁর ওই মন্তব্যের সমালোচনা করে পাল্টা আক্রমণ করে সিপিএম। মঙ্গলবার যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে মমতা বলেন, ‘‘যদি কোথাও কোনও কলেজে, কোনও বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কর্মস্থলে কারও উপর কেউ র্যাগিং করে, একটা ফোন করে ইনফর্মেশন (তথ্য) দেবেন, আর আপনার ফোন নম্বরটা দিয়ে দেবেন। সেই নম্বর গোপন থাকবে। আপনার তথ্য যাতে কেউ না পায়, তার জন্য পুলিশ সেফ লকার তৈরি করবে।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘কত কষ্ট করে বাবা-মায়েরা ছেলেমেয়েদের মানুষ করে। ছেলেমেয়েরা এই সব জায়গায় (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) ভর্তি হতে আসে। সেখানে দিনের পর দিন তাদের উপর যে অত্যাচার হয়...।’’ একটু থেমে মুখ্যমন্ত্রী জানান, শুধু যাদবপুর নয়, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগিং হয়। তিনি বলেন, ‘‘র্যাগিং হয় না, আমি তো কোনও দিন এমনটা শুনিনি। কিন্তু আমাদের সময়ে এ সব ছিল না। ইদানীং এ সব বেড়েছে। যত দেশটা উন্নত হচ্ছে,কারও কারও তত অধঃপতন হচ্ছে।’’
মুখ্যমন্ত্রী পড়াশোনার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘পড়াশোনায় ১০০ শতাংশ নম্বর পেলাম, এটাই আমার ‘কোয়ালিফিকেশন’ নয়। প্রকৃত মানুষ হওয়াই ‘কোয়ালিফিকেশন’। অনেকে পড়াশোনা তেমন করেননি। কিন্তু তাঁর মানবিক দিক রয়েছে। সুতরাং, আগে মানুষ হন। যাঁরা এগুলো করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে জোট বাঁধুন।’’