কালীঘাটের বাড়ির লাগোয়া অফিসে সাংবাদিক বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আচমকাই সাংবাদিক বৈঠকের ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের কালীঘাটের বাড়ির লাগোয়া দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করবেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে। বিজয়া দশমীর পরে পরেই সাধারণত সাংবাদিক বৈঠক করেন না মমতা। কিন্তু সাংবাদিক বৈঠকের কথা জানাজানি হতেই রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছে, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র হানা নিয়ে বলতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব শেষ হতে না হতেই যে ভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থা বাংলার শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে, তা নিয়েই মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সাতসকালে মন্ত্রীর সল্টলেকের বাড়িতে হানা দিয়েছেন ইডি-র আধিকারিকেরা। ইডি সূত্রে খবর, রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পরেই নাম উঠে এসেছে জ্যোতিপ্রিয়ের। সল্টলেকের বিসি ব্লকে পাশাপাশি দু’টি বাড়িতে (বিসি ২৪৪ এবং বিসি ২৪৫) সকাল থেকে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইডি।
বিজয়া দশমীর পরের দিনগুলিতে সাধারণত মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাড়িতেই পরিচিত, নেতা-মন্ত্রী-বিধায়ক এবং দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু তাঁর পুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই যে ভাবে ইডি জ্যোতিপ্রিয়র বাড়িতে হানা দিয়েছে, তা নিয়েই হয়তো মুখ্যমন্ত্রী নিজের মতামত ব্যক্ত করতে পারেন। তাই শাসক-বিরোধী সব পক্ষের নেতাই তাকিয়ে মমতার সাংবাদিক বৈঠকের দিকে। কারণ, তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের সিবিআই বা ইডি দিয়ে হেনস্থার অভিযোগ তুলে আগেও সরব হয়েছেন তিনি। এমনকি তাঁর পরিবারকেও নিশানা করা হচ্ছে বলেও সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এ বার তাঁর সতীর্থর বাড়িতে ইডির হানার প্রতিবাদেও সরব হবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
পায়ের সমস্যার জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই বাড়িতে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কালীঘাটের বাড়ি থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। সঙ্গে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, ২৭ অক্টোবর রেড রোডের কার্নিভালের দিন প্রকাশ্যে আসবেন। কিন্তু তার এক দিন আগেই বাসভবন থেকেই রাজনৈতিক বিষয়ে সুর চড়াতে পারেন মমতা। কারণ, জ্যোতিপ্রিয় তাঁর বহু দিনের রাজনৈতিক সঙ্গী। ২০০১ সাল থেকে বিধানসভার সদস্য। ২০১১ সালে পরিবর্তনের সরকার গঠনের সময় থেকেই তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য। প্রথম ১০ বছর তিনি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী। এমন একজন সতীর্থকে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘হেনস্থা’ করছে বলেও অভিযোগ করা হতে পারে।