মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ চূড়ান্ত করার জন্য সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৯ অগস্ট নবান্ন সভাঘরে এই বৈঠক ডেকেছেন তিনি।
‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ কবে পালন করা হবে তা ঠিক করতে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা ইতিহাসবিদ সুগত বসুকে উপদেষ্টা করে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ কমিটি’ তৈরি হয়েছে। আহ্বায়ক করা হয়েছে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা ও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগগা। আমন্ত্রণ পেলেও অবশ্য বৈঠকে যোগ দেননি বিজেপি বিধায়ক মনোজ। গত শুক্র ও সোমবার বিধানসভায় এই কমিটির বৈঠক হয়। সোমবারের বৈঠকে, বাংলা নববর্ষের দিন অর্থাৎ ১ বৈশাখকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসাবে পালন করার সুপারিশ করা হয়।
বুধবার নবান্ন থেকে সর্বদলীয় বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে। এই বৈঠকে রাজ্যের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। রাজ্যে বিধানসভার প্রধান বিরোধী দল বিজেপি ছাড়াও কংগ্রেস, সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের বিভিন্ন শরিক দলের পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে এসইউসিকেও। কোন দলের তরফে, কে এই বৈঠকে যোগদান করবেন তা ঠিক করে নবান্নে নাম জমা দিতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
রাজ্য বিজেপি ২০ জুনকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করে। কারণ, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভায় ভোটাভুটিতে বাংলা ভাগের বিষয়টি স্থির হয়েছিল। বাংলার দু’ভাগের একটি ভাগ পূর্ব পাকিস্তান হিসাবে চিহ্নিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়। গত ২০ জুন রাজভবনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে ফোনে অনুরোধ জানিয়ে এবং পরে চিঠি লিখে রাজ্যপালকে এই আয়োজন থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় থেকে রাজভবনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেন আনন্দ বোস।
বিজেপির ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ নিয়ে আগেও আপত্তি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, দেশভাগের যন্ত্রণাকে উচ্ছ্বাস পালনের দিবস বলে পালন করা তিনি সমর্থন করেন না। এ বার সরকারি ভাবে তাই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ ঘোষণা করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অনেকেরই মতে, সর্বদলীয় বৈঠক মারফত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে তাঁর এই উদ্যোগে শামিল করতে কৌশলী চাল দিয়েছেন মমতা।