Mamata Banerjee

‘১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার কেন্দ্রের’, ‘লজ্জাজনক’: মুখ্যমন্ত্রী

বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:২৫
Share:

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

১০০ দিনের পাওনা অর্থ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনই অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে বললেন, “মোদী সরকারের এমন প্রয়াস লজ্জাজনক!” বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। কার্যত সেই সুরেই বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ এনেছেন মমতা।

Advertisement

তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি লক্ষ করছি যে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এমএনআরইজিএ তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে যা প্রচারিত হয়েছে তার মধ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে বেশ কিছু ভুল তথ্য দেখানো হয়েছে। আমাদের প্রবল আন্দোলন, এমনকি বিস্তারিত তথ্য এবং হিসাব জমা দেওয়া পরেও কেন্দ্র কোনও বকেয়া অর্থ দেয়নি। উল্টে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর জন্য ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে। রাজ্য সরকারকে অপদস্থ করতেই এই কাজ করা হয়েছে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আমরা আমাদের প্রাপ্য অংশ পেতে চাই, এ ভাবে ভুল তথ্য ছড়ানোর পরেও আমরা বঞ্চিত মানুষের পাশেই থাকতে চাই। বিষয়টি লজ্জাজনক!’’

বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ১৬ নভেম্বর নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের সভা হবে। সেই সভা থেকেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা ঠিক করবেন তাঁরা। মমতা বলেছিলেন, ‘‘১ নভেম্বর থেকে আমাদের আন্দোলনে নামার কথা ছিল। কিন্তু ১৬ তারিখ রূপরেখা ঠিক করে আমরা এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নামব।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘ওই টাকা বাংলার মানুষের প্রাপ্য। কাজ করার পরেও মজুরি আটকে রেখেছে। কেবল সেই খাতেই রাজ্যের পাওনা রয়েছে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। যত দিন না সেই টাকা রাজ্য পাচ্ছে, তত দিন আন্দোলন চলবে।’’ আর বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের টাকা নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে বলে অভিযোগ এনে তোপ দাগলেন মমতা।

Advertisement

উল্লেখ্য, বকেয়া মেটানোর দাবিতে গত ২ এবং ৩ অক্টোবর অভিষেকের নেতৃত্বে দিল্লিতে অভিযান করেছিল তৃণমূল। অসুস্থতার কারণে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেননি মমতা। রাজধানীর এই কর্মসূচি হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। ৩ অক্টোবর গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের দেখা না করে চলে যান বলে অভিযোগ। তার পরে কৃষি ভবন থেকে অভিষেক-সহ তৃণমূল নেতানেত্রীদের গ্রেফতারি হইচই ফেলে দিয়েছিল। এর পর ৫ অক্টোবর ‘রাজভবন চলো’র ডাক দিয়ে ধর্নায় বসেছিলেন অভিষেক। কিন্তু রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কলকাতায় না থাকায় অভিষেক রাজভবনের উত্তর ফটকের সামনে ধর্না শুরু করেন। রাজ্যপাল সেই সময়ে কেরল-দিল্লি-উত্তরবঙ্গের মধ্যে যাতায়াত করছিলেন। প্রথমে তৃণমূলকে উত্তরবঙ্গে সময় দেন রাজ্যপাল। সেখানে অভিষেক পাঠিয়েছিলেন দলের দুই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র এবং রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে। তাঁরা দেখা করে রাজ্যপালকে জানিয়ে দেন, দলের মূল প্রতিনিধিদল কলকাতার রাজভবনেই দেখা করবেন। শেষ পর্যন্ত ৯ অক্টোবর বিকেলে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেকরা।

উল্লেখ্য, রাজ্যপাল তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি সমগ্র বিষয়টি কেন্দ্রের গোচরে আনবেন। অভিষেকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষ করেই দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তিনি রাজভবন থেকে বার হওয়ার পর অভিষেককে নেত্রী মমতা-সহ দলের বর্ষীয়ান নেতারা অনুরোধ করেছিলেন ধর্না তুলে নিতে। সেই মতো ধর্না তুললেও অভিষেক ঘোষণা করেছিলেন, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যদি কেন্দ্র বকেয়া না দেয় তাহলে ১ নভেম্বর থেকে রাস্তায় নামবে তৃণমূল। তিনি এ-ও বলেছিলেন, নভেম্বরের সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন মমতা। আর বুধবার নবান্নে মমতা জানিয়ে দেন, ১৬ নভেম্বরের পর আন্দোলনে রাস্তায় নামবে তৃণমূল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement