ছবি: সংগৃহীত।
সংক্রমণ বাড়ছে করোনা-যোদ্ধাদের মধ্যেও। এ বার সংক্রমিত হলেন আলিপুরদুয়ারের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। গিরীশচন্দ্র পশ্চিম মেদিনীপুরের পূর্বতন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। ছুটিতে মেদিনীপুর শহরের বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। এখানেই তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়েছে। রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।
উপসর্গ না থাকায় আপাতত গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন এই স্বাস্থ্য কর্তা। রবিবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে গিরীশচন্দ্র বলেন, ‘‘কোনও উপসর্গ নেই। তাই হোম আইসোলেশনেই আছি।’’ আলিপুরদুয়ারের ডেপুটি সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘আমাদের সিএমওএইচ ছুটিতে বাড়িতে রয়েছেন। তিনি সক্রমিত হয়েছেন বলে খবর মিলেছে। তিনি গত মাসেই এই জেলা ছেড়েছেন। তাই কারও সংস্পর্শে আসার প্রশ্ন আসছে না।’’
মাসখানেক আগে মালদহের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। ১৮ জুন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন মালদহের উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ১ মৃগাঙ্কমৌলী করও। সুস্থ হয়ে কিছুদিন আগে তাঁরা কাজে যোগ দিয়েছেন। তিন সপ্তাহ আগে উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ২ অমিতাভ মণ্ডলও সংক্রমিত হয়েছিলেন। সেরে উঠে তিনিও কাজে ফিরেছেন। কালিম্পং জেলা হাসপাতালের সুপার চন্দ্রকুমার ছেত্রী, শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কুন্তল রায়ও করোনার কবলে পড়েছিলেন। সকলেই সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। মেদিনীপুরেও একাধিক চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
গিরীশচন্দ্র দীর্ঘদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ছিলেন। মাস দুয়েক আগে তাঁর বদলি হয়েছে আলিপুরদুয়ারে। পূরণ শর্মাকে সরিয়ে আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিসেবে জুন মাসের শেষ সপ্তাহে তিনি কাজে যোগ দেন। জানা যাচ্ছে, করোনা-কালে আলিপুরদুয়ারে পৌঁছেই নিজের করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন গিরীশচন্দ্র। সেই সময় রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল।
তবে সপ্তাহ দুয়েক পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে তাঁর এক অস্ত্রোপচার হয়। তারপর বিশ্রামে থাকতে ছুটি নেন তিনি। ছুটিতে দিন দশেক আগে মেদিনীপুরে আসেন। তাঁর করোনার কোনও উপসর্গ ছিল না। তবে জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি এক পরিচিত দেখা করতে তাঁর মেদিনীপুরের বাড়িতে এসেছিলেন। ওই ব্যক্তি পরে করোনা পজ়িটিভ হন। সেই সূত্রে নিজের করোনা পরীক্ষা করান গিরীশচন্দ্র। শুক্রবার তাঁর নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল। শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালের ল্যাবে পরীক্ষার পরে রিপোর্ট এসেছে পজ়িটিভ। আজ, সোমবারই আলিপুরদুয়ারে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল গিরীশচন্দ্রের। প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত সেরে ফেলেছিলেন। তবে এখনই আর সেখানে ফেরা হচ্ছে না তাঁর। তবে মেদিনীপুরে থেকেই আলিপুরদুয়ারের অন্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন তিনি।