বিধানভবনে কংগ্রেসের কর্মশালায় চিদম্বরম। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের বিজেপি বিরোধী দলগুলির বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং তিনি সেখানে যাবেন বলে কংগ্রেস আশাবাদী। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর)-এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ১৩ জানুয়ারি দিল্লিতে বিরোধী দলগুলির বৈঠক ডেকেছিল কংগ্রেস। মমতা সেখানে যাননি। সে বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে শনিবার কলকাতায় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘সনিয়া গাঁধীর ডাকে দিল্লির বৈঠকে ২০টি দল এসেছিল। পরে আবার বৈঠক হতে পারে। যারা আসেননি, তাঁরা তখন আসতে পারেন।’’ চিদম্বরমের সংযোজন, ‘‘আবার ওই ধরনের বৈঠক হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিশ্চয় আমন্ত্রণ যাবে।’’
তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘বাংলা-সহ কয়েকটি রাজ্যে দলগুলির বিশেষ বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু বৃহত্তর ছবিটা উপেক্ষা করা যাবে না। সংবিধান বাঁচানোর এই লড়াইয়ে ধীরে ধীরে সব বিরোধী দলকে এক মঞ্চে আসতেই হবে।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল এবং কংগ্রেস পরস্পরের বিরোধী। বিধানসভা ভোটের আগে এই বিন্যাস অনুযায়ী পদক্ষেপ উভয় দলের কাছেই প্রয়োজনীয়। চিদম্বরম সে দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
সিএএ এবং এনপিআর নিয়ে ওই দুই বিষয়ের যে কোনও পাঁচ জন সমালোচকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিতর্কে বসারও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন চিদম্বরম। তাঁর কথায়, ‘‘রামচন্দ্র গুহ, অরুন্ধতী রায়, হর্ষ মান্দার বা যে কেউ— প্রধানমন্ত্রী ওঁর পছন্দমতো সিএএ এবং এনপিআরের পাঁচ জন সমালোচকের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। সেটা মানুষ টিভিতে দেখুক। মানুষ বুঝে নেবে।’’
চিদম্বরমের ব্যাখ্যা, কোথাও একাধিক দল যৌথ ভাবে, কোথাও আলাদা ভাবে লড়ছে। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস বাম দলগুলির সঙ্গে যৌথ লড়াইতে আছে। লড়াই এক মঞ্চে হোক বা আলাদা, লড়াইটা হচ্ছে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চিদম্বরম এ দিন কংগ্রেসের কর্মশালায় প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে ব্যাখ্যা করেন— সিএএ সংবিধান বিরোধী এবং দেশের নাগরিকদের অধিকার হরণের বিষয়। তার ভিত্তিতে এ বিষয়ে বিজেপির পুস্তিকার প্রতিটি বক্তব্যের জবাব দিয়ে পাল্টা পুস্তিকা তৈরি করবে প্রদেশ কংগ্রেস। সিএএ-র সমর্থনে বিজেপি-র অভিনন্দন যাত্রার পাল্টা সংবিধান বাঁচাও যাত্রার কর্মসূচিও নেবে তারা।