বিজেপির আইন অমান্য ঘিরে তাণ্ডব

কৃষ্ণনগর, বারাসত, জলপাইগুড়ির পরে এ বার রায়গঞ্জ ও বসিরহাটেও বিজেপির আইন অমান্য কর্মসূচি নিয়ে ধুন্ধুমার বাধলো। সোমবার বিজেপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে মহকুমাশাসকদের দফতরের সামনের এলাকা। রায়গঞ্জ ও বসিরহাটের দুই আইসি আহত হয়েছেন। জখম হন বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য নেতা রীতেশ তিওয়ারি-সহ বিজেপির নেতাকর্মীরাও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৩১
Share:

পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বিজেপি কর্মীদের। সোমবার রায়গঞ্জে বিবেকানন্দ সরকারের তোলা ছবি।

কৃষ্ণনগর, বারাসত, জলপাইগুড়ির পরে এ বার রায়গঞ্জ ও বসিরহাটেও বিজেপির আইন অমান্য কর্মসূচি নিয়ে ধুন্ধুমার বাধলো। সোমবার বিজেপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে মহকুমাশাসকদের দফতরের সামনের এলাকা। রায়গঞ্জ ও বসিরহাটের দুই আইসি আহত হয়েছেন। জখম হন বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য নেতা রীতেশ তিওয়ারি-সহ বিজেপির নেতাকর্মীরাও।

Advertisement

বিজেপির দাবি, পুলিশই তাদের কর্মীদের আক্রমণ করেছে। পিছন থেকে পুলিশকে মদত দিয়েছে তৃণমূল কর্মীরা। প্রশাসনের পাল্টা দাবি, প্রথমে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশই। বিজেপির অবশ্য দাবি, তাদের সমর্থকদের দিকে গুলিও ছোড়া হয়েছে।

এ দিন রায়গঞ্জে দুপুর আড়াইটে নাগাদ রীতেশবাবু ও জেলা সভাপতি শুভ্র রায়চৌধুরীর নেতৃত্বে বিজেপির পাঁচ হাজারেরও বেশি কর্মী সমর্থক ব্যারিকেড ভেঙে জেলাশাসকের দফতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ বেধে যায়। জখম হন রায়গঞ্জ থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তী-সহ ১৫ জন পুলিশকর্মী। পুলিশও রবার বুলেট ছোড়ে। কাঁদানে গ্যাসও ফাটানো হয়। বিজেপির কর্মী সমর্থকেরাও পাল্টা ইট পাটকেল ও দু’টি বোমা ছোড়েন বলে অভিযোগ। বিজেপির দাবি, পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন কুমারজোল এলাকার বাসিন্দা চন্দন দাস। ছবি তুলতে গিয়ে জখম হন এবিপি আনন্দের চিত্র সাংবাদিক নান্টু দে।

Advertisement

পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। জখম

সহকর্মীর পায়ে জল দিচ্ছেন দলীয় বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য।

সোমবার বসিরহাটে নির্মল বসুর তোলা ছবি।

উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজার দাবি, ‘‘পুলিশ গুলি ছোড়েনি। আন্দোলনকারীরাই প্রথমে পুলিশের দিকে ইট পাটকেল, গুলি ও বোমা ছুড়েছেন।’’

পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলে আজ, মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্যে দলের সহ পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের এক কর্মীকে পুলিশ গুলি করেছে।’’ তাঁর দাবি, দলের দু’শো কর্মী আহত হয়েছেন। সিদ্ধার্থনাথ বলেন, ‘‘তৃণমূল কর্মীরা পিছন থেকে পুলিশকে মদত দিয়েছে।’’

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী অবশ্য বলেন, ‘‘বিজেপি যেখানেই যাচ্ছে, সেখানেই তৃণমূলের ছায়া দেখে ভয় পাচ্ছে। ওদের সঙ্গে রাজনৈতিক মোকাবিলার সুযোগই তো হচ্ছে না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুলিশ প্রশাসনকে আক্রমণ করা হচ্ছে।’’

এ দিন বসিরহাটে বেলা চারটে নাগাদ বিজেপির বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যকে দলের কর্মী সমর্থকদের জমায়েতে বলেন, ‘‘আইন অমান্য তো আর নিরামিষ হয় না। আমাদের হরিনামের দল নয়। ওরা ঠেলাগুঁতো দেবে, আমরাও দেবো।’’ সেই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ ছিল, ‘‘মেয়েরা সামনের সারিতে থাকবেন।’’ এই প্রসঙ্গে সুব্রতবাবুর বক্তব্য, ‘‘আগেই বলেছিলাম রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস বিশৃঙ্খলা করছে। শমীকবাবুকে ধন্যবাদ, তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন।’’

শমীকবাবুর নেতৃত্বেই এ দিন কয়েকশো বিজেপি কর্মী-সমর্থক বোটঘাটের পাশে মঞ্চ থেকে এগোন মহকুমাশাসকের অফিসের দিকে। পুলিশের বাধা প্রথমে উড়ে যায়। চোট পান বসিরহাটের আইসি গৌতম মিত্র। পরে রুখে দাঁড়ায় পুলিশ, র‌্যাফ। শুরু হয় এলোপাথাড়ি লাঠি চালানো। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘মার খেতে আমরা প্রস্তুত।’’ শমীকবাবুরও কথায়, ‘‘পুলিশকে লাঠি চালাতে বাধ্য করেছে এই সরকার।’’

সোমবার কলকাতায় অবশ্য বিজেপির আইন অমান্য কর্মসূচি ঘিরে কোনও অশান্তি হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement