—নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়ে পথে নেমেছে বিজেপি। বৃহস্পতিতে স্বাস্থ্য ভবন অভিযানে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে তুলকালাম পরিস্থিতির পর শুক্রবার রাজ্য জুড়ে থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে নামল তারা। রাজ্যের জায়গায় জায়গায় থানা ঘেরাও করে অবস্থান বিক্ষোভ করলেন দলের সাংসদ, বিধায়ক-সহ অন্য নেতা-কর্মীরা। কোথাও নেতৃত্ব দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কোথাও আবার দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বেহালায় থানায় দলের অবস্থান বিক্ষোভে ছিলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অবশ্য শ্যামবাজার মোড়ের ধর্নামঞ্চে রয়েছেন। সেখানে রয়েছেন তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। সেই অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় সল্টলেকে। গ্রেফতারও হন শুভেন্দু এবং দলের রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য-সহ কয়েক জন। তার পরেই থানা ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। সেই মতো শুক্রবার নন্দীগ্রাম থানায় বিজেপির নেতা-কর্মী এই কর্মসূচি শুরু করতেই উত্তেজনা ছড়ায়। তাঁরা থানার গেট খুলতে যাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয়। পরে বিজেপি নেতারা থানায় গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন। বিজেপি নেতা মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে শতাধিক বিজেপি নেতা-কর্মীর নামে ভূরি ভূরি মিথ্যা মামলা রয়েছে। এই রাজ্যের পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। যার ফলস্বরূপ রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকেও গ্রেফতার করতে পিছপা হয়নি তারা।’’
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতেও বিজেপি নেত্রী রেখা পাত্রের নেতৃত্বে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে বসিরহাট কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন রেখা। হেরে গিয়েছেন। তার পর থেকে রাজনীতির ময়দানে তেমন সক্রিয়ও ছিলেন না। এ বার আরজি কর-কাণ্ডের আবহে পথে নামলেন রেখা। তিনি বলেন, ‘‘আরজি করের ঘটনা নিয়ে সারা রাজ্যে আরও প্রতিবাদ হবে। যত দিন যাবে, তত প্রতিবাদ বাড়বে।’’ হুগলির চুঁচুড়া থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। চুঁচুড়া ঘড়ির মোড় থেকে মিছিল করে তাঁরা চুঁচুড়া থানার সামনে হাজির হন। থানার গেট খুলে ভিতরে ঢোকারও চেষ্টা করেন। তা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। এর পর থানার সামনে বসে শুরু হয় বিক্ষোভ।
বিজেপির থানা ঘেরাও ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড শিলিগুড়িতেও। বিজেপির ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির ৪ ও ৫ নম্বর মণ্ডলের কর্মী-সমর্থকেরা এনজেপি থানা ঘেরাও করেন। থানার সামনে ব্যারিকেড থাকায় বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। ব্যারিকেড ভেঙেই এগোতে যান বিক্ষোভকারীরা। তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয়। মাটিগাড়া থানাতেও বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশি বাধার মুখে পড়ে পরে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেতা-কর্মীরা। দক্ষিণ দিনাজপুরেও আটটি থানা থানা ঘেরাও করা হয়। বিজেপি নেতা বাপী সরকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসক হিসেবে ব্যর্থ। তাঁর প্রশাসনে মহিলারা আর নিরাপদ নন। তাই এক্ষুনি তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। পদত্যাগ করা উচিত স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। আরজি কর-কাণ্ডে দোষীদের গ্রেফতার করার বদলে এই সরকার তাদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধেই আমাদের আন্দোলন।’’